আপনার ত্বকের সর্বোত্তম যত্ন নেয়ার জন্য যে রুটিন তৈরি করবেন, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিন আপনার বয়সের উপর। বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রতিনিয়তই আমাদের ত্বকে আসে পরিবর্তন। যেমন টিনেজ বা ২০ বছর বয়সে ব্রণ এবং তৈলাক্ত ত্বক নিয়ে চিন্তা হয়; ৩০ বছর বয়সে সেই চিন্তাই পরিবর্তিত হয়ে হাইড্রেশনে চলে যায়; আবার, ৪০/৫০ বছর বয়সে এই চিন্তাই পরিবর্তিত হয়ে ত্বকের বলিরেখা এবং বার্ধ্যকের ছাপ নিয়ে চিন্তা। এভাবেই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিয়তই চিন্তাচেতনাও বদলাতে থাকে।
তবে আজকের এই ব্লগে আমরা কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে আলাপ করবো। তাদের এই বাড়ন্ত বয়সটাতে ত্বকের যত্নের রুটিন নিয়েই সাজানো হয়েছে এই বিউটি ব্লগ। কেননা, অন্যান্য যে কোন বয়সের তুলনায় এই বয়সের ত্বকের যত্নের রুটিন পুরোপুরিই ভিন্ন বলা চলে। কেননা, এই বয়সটাতে হরমোনের অত্যধিক উৎপাদনে ত্বকে ব্রণ এবং অতিরিক্ত তেল চিটচিটে ভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয় প্রতিনিয়ত। তাই টিনেজ বয়সটাতে একটি স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করা অত্যন্ত জরুরী। আর সেই পারফেক্ট রুটিনে কি কি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরী তাই নিয়ে আজকের ব্লগ।
সাধারণ যত্ন
টিনেজ বয়সের ত্বকে হরমোনে পরিবর্তনে প্রচুর তেল নিঃসরিত হয়। ফলে ব্রণ, পিম্পল এবং ব্ল্যাক হেডস উঠার সম্ভাবনা থাকে। তাই বারবার মুখ ধোয়াটা অত্যন্ত জরুরী। জেল বা ফোম জাতীয় ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়াও, টোনার এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করাও জরুরী।
ওয়েল ক্লিনজার
স্কিন কেয়ার রুটিন এ তৈলাক্ত ত্বকের তেল চিটচিটে ভাবের চাইতে বিরক্তিকর কিছু আর নেই যেন। এই বিরক্তিকর ভাব থেকে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই ত্বক রাখুন পরিষ্কার। ব্যবহার করতে হবে ভালো মানের ওয়েল ক্লিনজার।
ময়েশ্চারাইজার
ত্বকের যত্নের আরেকটি মূল বিষয় হচ্ছে ময়েশ্চারাইজার। ত্বক ড্রাই হোক কিংবা ওয়েলি, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করাটা একদম জরুরী একটা বিষয়। পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজারটি যেন ত্বকের সঙ্গে মানানসই হয় সেদিকেও বিশেষ নজর রাখতে হবে। স্কিন ওয়েলি হয়ে জেল ময়েশ্চারাইজার এবং ড্রাই হলে ক্রিম ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
এক্সফোলিয়েট
টিনেজ ত্বকে এক্সফোলিয়েট করাটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহে ২/১ বার ফেসিয়াল স্ক্রাব ব্যবহার করা ত্বকের জন্য ভালো। সেক্ষেত্রে হোমমেড স্ক্রাব ব্যবহার করাটা আরো বেশি কার্যকর। তবে স্ক্রাব করার সময় ব্রাশ ব্যবহার করুন। আর যদি হাত দিয়ে করতে হয় তাহলে আলতোভাবে ঘষুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহার
টিনেজ বয়সটাতে ঘরের চাইতে বাইরেই থাকা হয় বেশি। আর তাই এই সময়টাতে কেউই সান প্রটেকশন বা সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা নিয়ে ভাবে না। কিন্তু এইটাই পরবর্তী বয়সে বিভিন্ন স্কিন ডিজিজের কারণ হয়ে দেখা দেয়। তাই, SPF সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন ত্বকের সুরক্ষায়।
ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলুন
ভারী মেকআপ অনেক বেশি কেমিক্যালস থাকায় তা ত্বকের দারুন ক্ষতি করে। লোমকূপের ছিদ্র বন্ধ করে র্যাশ, লালচে ভাব এমনকি ব্রণ বা পিম্পলের আগমন ঘটাতে পারে। তাই, নিত্যদিনের ব্যবহারে ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলুন। আর ভারী মেকআপ করলেও মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করুন।
শীট মাস্ক
সপ্তাহে ১/২ দিন শীট মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন; যা স্কিনের জন্য বেশ ভালো একটা রুটিন। বাজারের শীট মাস্ক বাদ দিয়ে ঘরোয়াভাবেই এই মাস্ক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। বেসন, হলুদ, মধু, চন্দন, মুলতানি মাটি এবং রোজ ওয়াটার দিয়ে ফেস প্যাক বানিয়ে মুখে লাগালে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। সপ্তাহে ১/২ বারে ঝামেলা হলে মাসে ১/২ বার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে উপাদানসমূহে আবার অ্যালার্জি আছে কিনা তা জেনে নিতে হবে।
পাউডারের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন
ত্বকের তেল চিটচিটে ভাব দূর করতে অনেকেই পাউডার ব্যবহার করে থাকে। যেটা মোটেও উচিত নয়। এটা বরং আপনার ত্বকে আরো বেশি ক্ষতি করে। পাউডারের গুঁড়ো লোমকূপের ছিদ্র বন্ধ করে দেয়। তাই, পাউডার ব্যবহার এড়িয়ে টিস্যু বা ব্লটিং পেপার ব্যবহার করুন ত্বকের সুরক্ষায়।
সোর্স: 01. The Best Korean Skin Care Routine for Teens. 02. টিনএজের গ্রিন রুমে। 03. টিনেজারদের ত্বকের যত্ন। 04. টিনেজারদের স্কিন কেয়ার কেন করতে হবে এবং কিভাবে?