এবারের রমজান মাস শুরু হয়েছে এপ্রিল এ। মানে হলো, পুরোদমে গরমের মাস। তাই এ গরমে রোজা রাখার সময় সবাই যে সমস্যাটার মুখোমুখি হয় সেটা হলো ডিহাইড্রেশন। এখন রোজা ও রাখতে হবে তবে ডিহাইড্রেটেড হওয়া যাবেনা। তাই কিছু উপায় জানা থাকলে রোজা রাখলেও ডিহাড্রেশনে ভোগার সম্ভাবনা কম থাকে। রোজায় পানি শূন্যতা
চলুন দেখে নেই, কি সেসব উপায়
পানি খাওয়া
সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার শুরু করতে হবে পানি খেয়ে। পানি যখন শরীরে কম থাকে তখনই পিপাসা পেতে শুরু করে। কিন্তু সারাদিন পানি পান করার কোনো সুযোগ নেই। তাই ইফতার থেকে সেহরি, প্রথম ফোকাস থাকবে পানি খাওয়ার উপর।
এক্ষেত্রে একটি বোতল সবসময় পাশে রেখে দেয়া যায়। কাজের ফাঁকে ফাঁকে আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা পর পর নিয়ম করে পানি পানের অভ্যেস করতে হবে। তবে অনেকেই ভুলে যেতে পারেন। তাদের জন্য রিমাইন্ডার সাজেস্ট করা যেতে পারে। ফোনে বা ল্যাপটপে সেটার জন্য অ্যালার্ম সেট করে রাখা যেতে পারে।
অনেকে কার্বোনেটেড বেভারেজ যেমন, কোকা কোলা, সেভেন আপ, মিরিন্ডা, এসব খেতে পছন্দ করে। সেক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে এসব চিনি মেশানো ড্রিংকস শরীরে পানির ঘাটটি পূরন করেনা, উলটো এসব খাওয়ার পর আরো বেশী পরিমানে পানি খাওয়া উচিৎ।
লাইটওয়েট ড্রেস বেছে নেয়া
এমনিতেই গরমের সময় ভারী জামাকাপড় পড়লে দেখা যায় অনেক বেশী গরম লাগে। তাই রোজা রেখে হালকা রঙ এর কাপড় অনেক আরামদায়ক হতে পারে। এতে শরীর কম ঘামে ও গরমে হাঁসফাঁস লাগেনা। যদি কাজের জায়গা ইনডোরে হয় তাহলে হালকা রঙ বেছে নেয়া ভালো। আর যদি বাইরে যেতে হয় তাহলে কালো রঙ বাদে অন্য যেকোনো রঙ বেছে নেয়া যায়। রোজায় পানি শূন্যতা
ঠান্ডা পানি দিয়ে শাওয়ার নেয়া
অনেকেই জানেন, ঠান্ডা পানি দিয়ে শাওয়ার নিলে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে, গরম কম লাগে। রোজার সময় এটি আরো বেশি উপকারি হতে পারে শরীরকে ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচানোর জন্য। বাইরে বা অফিসে থাকলে টিস্যু বা তোয়ালে ভিজিয়ে কপালের উপর কিছুক্ষন দিয়ে রাখা যেতে পারে। এতে অনেকটা গরম কমে যায়।
এবার আসা যাক কী খাওয়া যাবে আর কী কী খাবার অ্যাভয়েড করলে ভালো হবে
সাধারনত রমজান মাসে খাবারের তালিকা এমন হওয়া উচিৎ যাতে খাবারগুলোতে পানির ভাগ বেশি থাকে। তাই ইফতার ও সেহরিতে চেষ্টা করতে হবে অতিরিক্ত রিচ ফুড বা রেড মিট যেমন, বিফ বা মাটন, তেলে ভাজা জিনিস পরিমানে কম খাওয়া বা পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া। এর পরিবর্তে টক দই, বিভিন্ন ধরনের তাজা ফলের রস, গ্রিন ভেজিটেবলস খাওয়া যেতে পারে। চেষ্টা করতে হবে চিনি জাতীয় খাবার কম খাওয়ার । এর পরিবর্তে খেজুর খাওয়া যেতে পারে।
এক্সারসাইজ
রোজা রাখলেই যে সারাদিন শুয়ে বসে কাটালে শরীর ভালো থাকবে এমন কোনো কথা নেই। সাধারন হাঁটাচলা, কাজ এসবকিছুই করা যায়। তবে সাধারন সময়ে যারা দিনের দুই থেকে তিন ঘন্টা ওয়ার্কআউট করেন তারা সেটা কমিয়ে আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা করে ফেলতে পারেন। এক্ষেত্রে সেটা ইফতারের পর করা যেতে পারে আবার সেহরির পর ও শরীরভেদে করা যেতে পারে।
এখানে প্রশ্ন থাকতে পারে এক্সারসাইজ করলে আরো পিপাসা পাবে। প্রতিদিন যদি এক্সারসাইজ করা হয় তাহলে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের হয়ে যায় যেগুলো পরবর্তীতে ডিহাইড্রেশনের কারন হতে পারে।
তবে এসবকিছুই করতে হবে শরীর কতটুকু নিতে পারবে তার উপর নির্ভর করে। মোটামুটি ব্যালান্সড ডায়েট ও পরিমিত ওয়ার্কআউট রোজা রাখার সুফল আরো বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়।
সবশেষে যেটা বলা জরুরী তা হলো স্ট্রেস ফ্রি থাকতে হবে। রোজা রাখতে পারাটা অনেক বড় বিষয় কারন এটা বছরে একবারই পাওয়া যায়। তাই রোজার পুরো একমাস সবকিছু ব্যালান্সড রাখলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে ও রোজাতে শরীর ডিহাইড্রেশনে ভুগবেনা।