‘সকালে ঘুম থেকে উঠলেই মুখ তেলতেলে লাগে! মেকআপ করার অল্প সময়ের মধ্যেই অয়েলি ফেইসের কারণে কেকি হয়ে যায়। বাইরে গেলে ধুলোময়লা আটকে ত্বকের একদম খারাপ অবস্থা হয়ে যায়। সেই সাথে একনে প্রবলেম তো আছেই! অয়েলি স্কিন বলে কি এসব থেকে রক্ষার কোনো উপায় নেই?’ যাদের ত্বক তৈলাক্ত, এ সমস্যাগুলো কমবেশি তারা সবাই ফেইস করেন। কিন্তু এই প্রবলেমগুলো দূর করার জন্য সঠিক ফেইসওয়াশ সম্পর্কে জানা না থাকার কারণে সমাধানও সহজে পাওয়া যায় না। অয়েলি স্কিনের সিবাম কন্ট্রোলের জন্য বেস্ট কয়েকটি ফেইসওয়াশ সম্পর্কে আজ আপনাদের জানাবো।
অয়েলি স্কিনের সিবাম কন্ট্রোলের জন্য ফেইসওয়াশ
১) BIODERMA SEBIUM GEL MOUSSANT PURIFYING CLEANSING FOAMING GEL
অয়েলি স্কিনের সিবাম কন্ট্রোলের জন্য কতকিছুই আমরা ব্যবহার করি। কিন্তু ত্বকে সেসব ইনগ্রেডিয়েন্ট স্যুট করবে কিনা, ইনফ্ল্যামেশন কমবে কিনা, ব্রণ হওয়ার চান্স কমবে কিনা এসব নিয়ে মোটেও ভাবি না। অয়েলি স্কিনের বেশ কয়েকটি প্রবলেমকে টার্গেট করে কাজ করে BIODERMA SEBIUM GEL MOUSSANT PURIFYING CLEANSING FOAMING GEL। ফেইসওয়াশটি-
- বেশ জেন্টল ও সোপ ফ্রি ক্লিনজিং জেল হওয়ায় অয়েলি ও একনে প্রন স্কিনে খুব ভালো কাজ করে।
- স্কিনে জমে থাকা ডার্ট, অয়েল ও মেকআপ পার্টিকেলস রিমুভ করে।
- ন্যাচারাল ময়েশ্চার ধরে রাখে।
- এতে আরও আছে জিংক ও কপার সালফেট, যা সিবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোল করে এবং ইনফ্ল্যামেশন কমায়।
- ডার্মাটোলজিস্ট টেস্টেড এই ফেইসওয়াশটি নন কমেডোজেনিক ও ফ্রেগ্রেন্স ফ্রি।
- হাইপোঅ্যালার্জেনিক।
- অয়েলি স্কিনের জন্য বেনিফিটেড হলেও সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যাবে।
- ব্যবহারের সময় পরিমাণে খুব অল্প লাগে।
২) INNSAEI LOW PH DAILY GEL CLEANSER 5.5
অয়েলি ও একনে প্রন স্কিনে ধুলোবালি ও মেকআপ পার্টিকেলস আটকে ত্বক করে তোলে নির্জীব ও প্রাণহীন। ত্বককে প্রাণবন্ত করে তুলতে এবং ব্রণের সমস্যা কমাতে খুব ভালো কাজ করে INNSAEI LOW PH DAILY GEL CLEANSER 5.5। এই ফেইসওয়াশ ব্যবহারের বেনিফিটস-
- এটি ব্যবহারে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়।
- এতে আছে BHA ইনগ্রেডিয়েন্ট, যা ব্রণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
- এর ব্যবহারে ত্বক থাকে ময়েশ্চারাইজড।
- নিয়মিত ব্যবহারে স্কিন সেনসিটিভিটি কমায়।
- স্কিনের নরমাল পিএইচ লেভেল বজায় থাকে।
- একনে প্রন স্কিনের জন্য ফেইসওয়াশটি ভালো কাজ করলেও সব ধরনের ত্বকেই এটি ব্যবহার উপযোগী।
- সকালে ও রাতে দুই সময়েই ব্যবহার করতে পারেন।
৩) GUERNISS ACNE FACIAL WASH
তৈলাক্ত ত্বক মানেই ফেইসে হাত দিলেই তেল চিটচিটে হয়ে যাওয়া। কোনোভাবেই যেন এই তেল ফেইস থেকে রিমুভ হয় না। আমাদের ত্বকে ন্যাচারাল অয়েল থাকে, যা বারবার ওয়াশের কারণে রিমুভ হয়ে যায়, আর স্কিনের ভেতর থেকে আবার অয়েল প্রোডিউস হয়। যার কারণে অয়েলিভাব কোনোভাবেই কমে না। অয়েলি স্কিন বলেই বারবার ফেইস ওয়াশ করতে হয়, এই ধারণা ভুল। বরং এমন ফেইসওয়াশ ইউজ করতে হবে যেটি স্কিনকে ভেতর থেকে ক্লিন করে এবং এক্সেস সিবাম রিডিউস করতে হেল্প করে। অয়েলি স্কিনের সিবাম কন্ট্রোলের জন্য এমনই একটি ফেইসওয়াশ হচ্ছে GUERNISS ACNE FACIAL WASH।
- স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই ফেইসওয়াশটি স্কিনের ডিপ লেয়ারে পেনিট্রেট হয় এবং ডিপলি ক্লিন করে।
- ফেইসের এক্সেস অয়েলের কারণেই একনে ও পিম্পল দেখা দেয়। এর ব্যবহারে এক্সেস অয়েল রিডিউস হয়, যার কারণে স্কিন থাকে একনে ফ্রি।
- এতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ শুধু ইমপিওরিটিজই রিমুভ করে না, সেই সাথে ক্লগড পোরসও আনক্লগ করে, ডেড সেলস রিমুভ করে। আর এই কারণে ত্বক হয়ে ওঠে আগের চেয়ে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।
৪) GFORS SALICYLIC ACID DEEP CLEANSING FOAM
অয়েলি ও একনে প্রন স্কিনের কথা বললে সবার আগে আসে স্যালিসাইলিক অ্যাসিডের নাম। এই উপাদানটি ব্রণকে টার্গেট করে কাজ করে এবং এতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ ব্রণ কমিয়ে স্কিনে দেয় সুদিং ফিল। স্কিনকে এক্সফোলিয়েট করে ডেড সেলস রিমুভ করে বলে স্কিন থাকে সফট। তাছাড়া প্রতিদিনের পল্যুশন আর মেকআপ পার্টিকেলস ভালোভাবে রিমুভ না হলে পোরস ক্লগের যে সম্ভাবনা থাকে, সেটাও কমায় এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি। এত সমস্যা সমাধানের জন্য ইম্পরট্যান্ট এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি রয়েছে GFORS SALICYLIC ACID DEEP CLEANSING FOAM এ।
- এতে আরও আছে অ্যালোভেরা যা একনে কজিং ব্যাকটেরিয়াগুলোকে রিডিউস করতে এবং কন্ট্রোল করতে হেল্প করে। ন্যাচারাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি বলে ইরিটেশন কমায় এবং স্কিনে দেয় সুদিং ফিল। এতে থাকা ন্যাচারাল অ্যাস্ট্রিনজেন্ট প্রোপার্টিজের কারণে স্কিনের এক্সেস অয়েল ডিজলভ হয় এবং স্কিন থাকে ময়েশ্চারাইজড। স্কারস, একনে স্পট ফেইড করতেও এটি বেশ কার্যকর। পোরস টাইট করতে, ও ডার্ট ডেড সেলস রিমুভ করতেও অ্যালোভেরা খুব ভালো কাজ করে।
- এই ফেইসওয়াশে আরও একটি ইনগ্রেডিয়েন্ট হচ্ছে লরিক অ্যাসিড। লরিক অ্যাসিডে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টিজ। একনে রিমুভ করার জন্য এই উপাদানটি খুবই কার্যকর। আমাদের স্কিনে Propionibacterium acnes নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া আছে, যেটা সাধারণত ত্বকেই পাওয়া যায়। এগুলো বেড়ে গেলে একনেও বেড়ে যায়। লরিক অ্যাসিড এই ব্যাকটেরিয়ার কার্যকারিতা কমায় এবং ইনফ্ল্যামেশন রিডিউস করে।
তাহলে বুঝতেই পারছেন এই ফেইসওয়াশটি কেন ও কীভাবে অয়েলি স্কিনের সিবাম কন্ট্রোলের জন্য বেশ কার্যকর? সব ধরনের ত্বকেই ব্যবহার করা যাবে। আপনার স্কিন যদি সেনসিটিভও হয়, তবু এটি স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করতে পারেন।
৫) NEUTROGENA OIL FREE ACNE WASH
অয়েলি স্কিনের সিবাম কন্ট্রোলের পাশাপাশি একনে প্রবলেমও সলভ করবে এমন ফেইসওয়াশ খুঁজে খুঁজে হয়রান হচ্ছেন? তাহলে বেছে নিন NEUTROGENA OIL FREE ACNE WASH। অয়েলি স্কিনের অধিকারীদের অনেকের কাছেই এটি বেশ পছন্দের একটি ফেইসওয়াশ। এর প্রধান কারণ সম্ভবত একনে রিডিউসে এটি বেশ ইফেক্টিভ বলেই।
- এর অয়েল ফ্রি ফর্মুলা স্কিনকে শুধু ডিপলি ক্লিনই করে না, এতে থাকা স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ভবিষ্যতে ব্রেকআউট হওয়া থেকেও ত্বককে সুরক্ষিত রাখে।
- স্কিনে দেয় সুদিং ফিলিং কোনোরকম ড্রাই করা ছাড়াই।
- এর নন কমেডোজেনিক ফর্মুলা পোরস ক্লগ করে না।
- এই ফেইসওয়াশটি ডার্মাটোলজিক্যালি টেস্টেড। নিয়মিত ব্যবহারে ২/৩ সপ্তাহের ভেতর পার্থক্য বোঝা যাবে।
অয়েলি স্কিনের সিবাম কন্ট্রোলের জন্য সঠিক ফেইসওয়াশ কোনটা হতে পারে তা নিয়েই আমাদের মাঝে কনফিউশন ক্রিয়েট হয় বেশি। আবার আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে প্রোডাক্ট কোনোটা স্যুট করতেও পারে, নাও পারে। আমি যে প্রোডাক্টগুলো সাজেস্ট করলাম সেগুলো অয়েলি স্কিনের জন্য খুব ভালো কাজ করে। এগুলো থেকে যে কোনোটাই আপনি বেছে নিতে পারেন। তবে যদি এক ফেইসওয়াশ এক সিজনে স্যুট হয়ে অন্য সিজনে বেটার রেজাল্ট না দেয়, সেক্ষেত্রে ফেইসওয়াশ চেঞ্জ করে দেখতে পারেন। স্যুট না হওয়া মানে কিন্তু প্রোডাক্টের মান খারাপ হয়ে যাওয়া নয়। কখনো কখনো ওয়েদার চেঞ্জ স্কিনের ব্যারিয়ার দুর্বল করে দেয় যার কারণে প্রোডাক্ট স্যুট হতে সমস্যা হতে পারে। যদি একনে প্রবলেম বেড়ে যায় তাহলে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিতে পারেন। সেই সাথে রেগুলার স্কিনকেয়ার করা, অয়েলি স্কিনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা, পর্যাপ্ত পানি পান করা, বাহির থেকে ঘরে ফিরে ডাবল ক্লিনজিং করা – এই রুটিনগুলোও ঠিকঠাক মেনে চলতে হবে।
স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপের বিভিন্ন প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন চারদিকে থেকে। চারদিকে’র দুটি আউটলেট রয়েছে বসুন্ধরা সিটি শপিং মল ও নারায়ণগঞ্জ এর চাষাড়াতে আল জয়নাল ট্রেড সেন্টারে। ফিজিক্যালি কিনতে চাইলে এই দুটি আউটলেট ঘুরে আসতে পারেন। আর ঘরে বসে প্রোডাক্ট হাতে পেতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন চারদিকে’র ওয়েবসাইট ও অ্যাপে।
ছবি – চারদিকে, দারাজ, নিউট্রোজেনা, সাটারস্টক