স্কিন ফ্লেকিনেস, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডসের সমস্যা খুব কমন। এমন ত্বকে ক্লিনজিং করার পর সমস্যা খুব একটা কমে না। এর একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে সঠিক ক্লিনজার বাছাই না করা। যার জন্য স্কিনের পিএইচ লেভেল ঠিক থাকে না, স্কিন ব্যারিয়ার ভেঙে যায়, স্কিন হয়ে ওঠে সেনসিটিভ। এই ধরনের ত্বকে তাই সব ধরনের ক্লিনজার ব্যবহার করা যায় না। বেছে নিতে হয় ময়েস্ট ফিনিশিং দিবে এবং স্কিনের পিএইচ লেভেল ধরে রাখবে এমন ক্লিনজার। পারফেক্ট ক্লিনজার ও ময়েস্ট ফিনিশিং এর জন্য দারুণ একটি ক্লিনজার সম্পর্কেই আজ আপনাদের জানাবো।
স্কিনের জন্য ময়েস্ট ফিনিশিং দিবে এমন ক্লিনজার কেন দরকার?
বডির অন্যান্য পার্টের স্কিনের চেয়ে ফেইসের স্কিন বেশ নাজুক হয়। স্কিনে প্রোডাক্ট স্যুট না হলে, সূর্যরশ্মির কারণে, ধুলোবালি, মেকআপ পার্টিকেলস ভালোভাবে ক্লিন না হলে, হার্শ কেমিক্যাল ইউজ করলে স্কিনে নানা ধরনের রিয়্যাকশন হতে পারে। আর এসব রিয়্যাকশনের ফলাফল হচ্ছে – একনে, র্যাশ, ফ্লেকি স্কিন, হোয়াইট হেডস, ব্ল্যাকহেডস, পোরস ক্লগ, স্কিন সেনসিটিভিটি ইত্যাদি। এমন ধরনের ত্বকে যদি ক্লিনজার স্যুট না হয়, তাহলে ত্বকের সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। তাই সবার আগে ত্বক ময়েশ্চারাইজড থাকবে এমন প্রোডাক্ট চুজ করতে হবে। আর স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের মধ্যে ক্লিনজারও এমনভাবে বেছে নিতে হবে যেন সেটি ময়েস্ট ফিনিশিং দেয়, ত্বক সফট রাখে, পিএইচ লেভেল বজায় রাখে। এতে ত্বক ভালো থাকবে।
স্কিনের পিএইচ লেভেল বজায় রাখা জরুরি কেন?
আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় অর্গান হচ্ছে ত্বক। যদি ত্বকে কোনো ধরনের ইনফেকশন হয় তাহলে প্রতিদিনের জীবন যাপনে কিছুটা বাধা আসে। যদি স্কিনের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্সড না থাকে তাহলে স্কিনের ডিফেন্স ব্যারিয়ার ধীরে ধীরে ড্যামেজ হয়ে যাবে এবং স্কিনে রিয়্যাকশন হওয়া শুরু হবে।
পিএইচ লেভেলের রেঞ্জ ০-১৪ পর্যন্ত। এই রেঞ্জের মাঝামাঝি অর্থাৎ ৭ নম্বর সংখ্যাকে নিউট্রাল ধরা হয়। ৭ এর নিচে গেলে সেটাকে অ্যাসিডিক বা অম্লীয় এবং ৭ এর উপরে গেলে ক্ষারীয় বা অ্যালকালাইন। আমাদের শরীরের পিএইচ (pH) লেভেল প্রায় ৭। আর মুখের ত্বকের ৫.৫। ত্বকের সুস্থতার জন্য এই ব্যালেন্স ধরে রাখা জরুরি।
পারফেক্ট ক্লিনজিং এর জন্য ক্লিনজার
ত্বক ময়েশ্চারাইজড রাখার জন্য এবং ত্বকের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স রাখার জন্য দারুণ কার্যকরী একটি ক্লিনজার হচ্ছে POUR LA PEAU Defence Barrier pH Cleanser। এই ক্লিনজারটি লো অ্যাসিডিটি হওয়ায় পিএইচ লেভেল কন্ট্রোলে থাকে। মুখ ধোয়ার পর শুষ্ক বা লালচে হয়ে যাওয়ার সমস্যা হবে না।
ক্লিনজারটির ইনগ্রেডিয়েন্টস
এই ক্লিনজারের মেইন ইনগ্রেডিয়েন্টস হচ্ছে Acacia Macrostachya Seed Extract। এই গাছটির জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকাতে। সাধারণত রান্না, স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরিতে, ধর্মীয় বিভিন্ন কাজে এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টেও বর্তমানে এর ব্যবহার হচ্ছে।
এই ইনিগ্রেডিয়েন্টের বেনিফিটস
- ময়েশ্চার ধরে রাখে
- স্কিন ব্যারিয়ার স্ট্রং করে
- ফ্লেকিনেস কমায়
- স্কিনের ওয়াটার ব্যালেন্স করে
- স্কিনের ইলাস্টিসিটি বাড়ায়
- ত্বকের সুরক্ষা বৃদ্ধি করে
হায়ালুরোনিক অ্যাসিড
স্কিনের ময়েশ্চার ধরে রাখার জন্য এতে আরও আছে ৮ ধরনের হায়ালুরোনিক অ্যাসিড। ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখে বলে এজিং সাইনস হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
এর বেনিফিটস
- ত্বকের আরাম নিশ্চিতের জন্য ড্রাইনেস কমিয়ে হাইড্রেট রাখে
- এজিং সাইনস রিডিউস করতে হেল্প করে
- স্কিনের ইলাস্টিসিটি ধরে রাখে
- কোলাজেন প্রোডাকশনে হেল্প করে
ক্যালামাইন
এই ক্লিনজারে রয়েছে ক্যালামাইন। এটি প্রকৃতি থেকে পাওয়া এক ধরনের খনিজ। খনিজ থেকে এটিকে পাউডার হিসেবে প্রসেস করা হয়। এরপর বিভিন্ন প্রোডাক্টে ইউজ করা হয়। এতে আছে জিংক অক্সাইড ও অল্প পরিমাণে আয়রন অক্সাইড। যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেয়।
এর বেনিফিটস
- একনে ট্রিট করতে হেল্প করে
- ডার্ক স্পটস রিডিউস করে
- সেনসিটিভ স্কিনে আরাম দেয়
- সান ড্যামেজ থেকে সুরক্ষা দেয়
ক্লিনজারটি কী কী কাজ করে?
হাইড্রেশন ধরে রাখে
এই ক্লিনজারের ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজিং ফ্যাক্টর ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল ময়েশ্চারাইজিং কেয়ার ধরে রাখার জন্য হাইড্রেশন রিটেইন করে।
সফট ক্রিম টাইপ বলে স্কিন সফট রাখে
এটি ক্রিম টাইপ লো অ্যাসিডিটি ফেসিয়াল ক্লিনজার হওয়ায় স্কিন ইরিটেশনের কোনো রিস্ক নেই। তাই যাদের র্যাশ হয় বা লালচে হয়ে যায় তারাও ব্যবহার করতে পারেন।
ক্লিনজিং এ রিফ্রেশিং ফিল দেয়
এই ক্লিনজারের ক্লিনজিং ইফেক্ট বেশ ভালো। এটি মেকআপ রেসিডিউ ও সানস্ক্রিন রিমুভ করতে খুব ভালো কাজ করে।
আরও কয়েকটি বেনিফিটস-
- স্কিন ময়েশ্চারাইজড রাখবে
- ত্বক করবে উজ্জ্বল
- স্কিনের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স করবে
- হাইপোঅ্যালার্জেনিক
- পোরস ডিপলি ক্লিন করে
- ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস রিমুভ করে
- এক্সেস অয়েল রিমুভ করে
কোন কোন ত্বকে ভালো কাজ করবে?
এই ক্লিনজারটি সব ধরনের ত্বকেই ব্যবহার করা যাবে। আমাদের ত্বক প্রতিদিন ডার্ট, পল্যুশন, সান এক্সপোজারের কারণে এফেক্টেড হয়। সেই সাথে সানস্ক্রিন, মেকআপ অ্যাপ্লাই তো আছেই। রোজ যদি স্কিন ভালোভাবে ক্লিন করা না হয় তাহলে ত্বকের ধরন যেমনই হোক না কেন, ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দিবে। যেহেতু এই ক্লিনজারটি জেন্টল, পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স করে, স্কিন ব্যারিয়ারের জন্য ডিফেন্স হিসেবে কাজ করে তাই সব ধরনের ত্বকের জন্যই এটি স্যুইটেবল। সেই সাথে আরও যারা এটি ব্যবহার করতে পারেন-
- যারা স্কিন ফ্লেকিনেসের সমস্যায় ভুগছেন
- যাদের প্রায়ই মেকআপ করতে হয়
- ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস সমস্যা নিয়ে যারা চিন্তিত
- সেনসিটিভ স্কিন হলেও ব্যবহার করা যাবে
স্কিন ব্যারিয়ার ড্যামেজ না হলেও ব্যবহার করা যাবে?
অবশ্যই! যারা ভাবছেন শুধু স্কিন ব্যারিয়ার ড্যামেজ হয়ে গেলে এটি ব্যবহার করতে হবে, মোটেও কিন্তু তা নয়। আপনার যদি স্কিন ব্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত নাও হয়ে থাকে, তবু এই পিএইচ ব্যালেন্সিং ক্লিনজারটি ব্যবহার করতে পারবেন। কারণ এটি শুধু ত্বক পরিষ্কারই রাখবে না, সেই সাথে ন্যাচারাল ময়েশ্চার লেভেল ধরে রাখবে কোনো ধরনের ক্ষতি ছাড়াই। এতে থাকা ৮টি হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের কারণে আপনার স্কিন যদি ডিহাইড্রেটেডও ফিল করে, তবে ইনস্ট্যান্টলি হাইড্রেট হয়ে যাবে।
ব্যবহারবিধি
- হাতের তালুতে পরিমাণমতো ক্লিনজার নিয়ে পানি দিয়ে ফোম তৈরি করে নিন।
- জেন্টলি ম্যাসাজ করে ফেইস ক্লিন করে নিন।
- নরমাল তাপমাত্রার পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
পারফেক্ট ক্লিনজিং ও ময়েস্ট ফিনিশিং এর জন্য দারুণ একটি ক্লিনজার সম্পর্কে আজ আপনাদের জানিয়ে দিলাম। যারা ভাবছিলেন ফ্লেকি ও ড্রাই স্কিন, সেনসিটিভ স্কিন এর জন্য কোন ক্লিনজারটি ভালো হবে, তাদের জন্য এটা বেশ ভালো একটি অপশন হতে পারে। স্কিনকেয়ার রুটিনে ক্লিনজার অ্যাড করার পর বাকি স্টেপগুলোও ঠিকভাবে মেনে চলতে হবে। নইলে ক্লিন ও ময়েশ্চারাইজড স্কিন পাওয়া যাবে না সহজে। সেই সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করা, ৭/৮ ঘন্টা ঘুমানো, সিরাম অ্যাপ্লাই করা, এক্সফোলিয়েশন করা, সানস্ক্রিন ব্যবহার করার মতো রুটিনও মেনে চলতে হবে। স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপের বিভিন্ন প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন চারদিকে থেকে। চারদিকে’র দুটি আউটলেট রয়েছে বসুন্ধরা সিটি শপিং মল ও নারায়ণগঞ্জ এর চাষাড়াতে আল জয়নাল ট্রেড সেন্টারে। ফিজিক্যালি কিনতে চাইলে এই দুটি আউটলেট ঘুরে আসতে পারেন। আর ঘরে বসে প্রোডাক্ট হাতে পেতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন চারদিকে’র ওয়েবসাইট ও অ্যাপে।
ছবি – চারদিকে, সাটারস্টক