কোরিয়ান স্কিনকেয়ার নিয়ে বর্তমানে সবাই অনেক আগ্রহী। তবে তার পেছনে কারন রয়েছে। উপাদানসমুহ যা একত্রে ত্বকে ব্যাবহারযোগ্য নয়, কোরিয়ান স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টগুলো স্কিনকেয়ারের বিভিন্ন স্টেপে ব্যবহার করা হয় যা একটু ইউনিক। তারা তাদের এই প্রোডাক্টগুলোতে এমন সব উপাদান বা ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করেছে যা ডার্মাটোলজিক্যালি একদম সেইফ। তবে এসব প্রোডাক্ট এর উপকারিতা ঠিকঠাক পেতে হলে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে, বিশেষ করে অ্যাক্টিভ কিছু ইনগ্রেডিয়েন্ট যুক্ত প্রোডাক্ট ইউজ করার সময়।
কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রুটিন যারা ফলো করেন তারা জানেন এতে ফেইস এর জন্য কিছু সেইফ এসিড ইউজ করা হয়ে থাকে যা বিভিন্ন স্কিন কনসার্নে ব্যবহার করা হয়। হতে পারে সেটা একনে ব্রেকআউট কমাতে, স্কিন ব্রাইট করতে অথবা এজিং প্রসেস স্লো করতে।
তবে শর্ত হলো কিছু অ্যাক্টিভ এসিড অন্য আরেকটি অ্যাক্টিভ এসিড এর সাথে ভালো কাজ করেনা। উলটো স্কিনে দুটো একই সময় অ্যাপ্লাই করলে একনে কমে যাওয়ার বদলে বেড়ে যায়, স্কিন ওভারড্রাই হয়ে যায় বা স্কিন ব্যারিয়ার এর ক্ষতি হয় ফলে ইরিটেশন বেড়ে যায়।
Retinoid or Retinol And Alpha Hydroxy Acid
রেটিনল এবং আলফা হাইড্রক্সি এসিড দুটোই এক্সফলিয়েশনে কাজ করে। অ্যান্টি এজিং, ফাইন লাইনস এবং ডার্ক স্পটস এ এই দুটো ইনগ্রেডিয়েন্ট ই ভালো কাজ করে। তাই দুটো একসাথে ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই। রেটিনলকে যদি প্রথমবার আপনার স্কিনের সাথে পরিচয় করান তাহলে ১% রেটিনল যুক্ত প্রোডাক্ট দিয়ে শুরু করতে হবে। নয়তো শুধু AHA দিয়ে শুরু করতে পারেন।
দুটোই কোলাজেন প্রডিউস করে, ত্বক উজ্জ্বল করে। কিন্তু দুটো একসাথে ইউজ করাটা খুব একটা কাজে আসেনা বরং ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
Retinoid or Retinol And Vitamin C
রেটিনল বা রেটিনয়েড এর সাথে ভিটামিন সি ইউজ করা যাবেনা কারন দুটোই খুব শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট। রেটিনল দিনে ইউজ না করাই ভালো। আর ভিটামিন সি দিনে ইউজ করা যায় কিন্তু সাথে সান্সক্রিন অ্যাপ্লাই করতে হবে।
Retinoid or Retinol and Benzoyl Peroxide
রেটিনল পোরস ক্লগড হতে দেয়না।একনের সাথে ফাইট করে এবং এন্টি এজিং এ সাহায্য করে। কিন্তু এর সাথে যদি বেনজয়েল পারঅক্সাইড ব্যবহার করা হয় তাহলে এটি রেটিনল এর মলিকিউল গুলো ডিএক্টিভেট করে দিতে পারে, মানে রেটিনল এর কার্যক্ষমতা কমে যায়। তখন এটি একনে কন্ট্রোল না করে একনে ব্রেকআউট এ মনোযোগ দিতে পারে। যেটাকে আমরা ব্যাকফায়ার বলি।
Retinoid or Retinol and Salicylic Acid (BHA)
রেটিনয়েড বা রেটিনল এর সাথে স্যালিসাইলিক এসিড একসাথে ইউজ করা উচিৎ না কারন দুটোই এক্সফলিয়েশনে কাজ করে। আপনি একইসাথে একনে কন্ট্রোল করতে চান এবং রিংকেলস কমাতে চান। তাই রেটিনল আর বেটা হাইড্রক্সি এসিড (Salicylic Acid) ব্যবহার করলেন। এতে যেটা হতে পারে সেটা হলো দুটোই আপনার স্কিনকে ড্রাই করে ফেলবে এবং স্কিনে একনে বেড়ে যাবে। স্কিন অতিরিক্ত ড্রাই হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্যালিসাইলিক এসিড সকালে এবং রেটনল রাতে ব্যবহার করা যেতে পারে তবে সাবধান থাকতে হবে।
Vitamin C And AHAs & BHAs
ভিটামিন সি যদিও অনেক ভালো অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট প্রোটেকশন হিসেবে কাজ করে তবে কাজ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমান পি এইচ ব্যালান্স দরকার হয় তা নাহলে এটি ত্বকের কোনো উপকারে আসেনা।
ভিটামিন সি কে যখন আলফা হাইড্রক্সি বা বেটা হাইড্রক্সির সাথে ইউজ করা হয় তখন পি এইচ ব্যালান্স ঠিক থাকেনা। তখন স্কিনে ভিটামিন সি দিয়েও কোনো লাভ হয়না।
তবে ব্যবহার করতে চাইলে দিনে ভিটামিন সি এবং রাতে AHAs & BHAs (সেদিন রেটিনল ইউজ করা যাবেনা)।
Multiple Retinol Products
রেটিনল এর সাথে রেটিনল বেইসড আরো কোনো প্রোডাক্ট ইউজ করা যাবেনা। মানে হলো, রেটিনল সিরাম ইউজ করলে, রেটিনল বেইসড ময়শ্চারাইজার বা আই ক্রিম অন্তত সেদিন ইউজ না করাই ভালো। এতে স্কিনে ইরিটেশন হওয়ার সম্ভাবনা থকে।
Soap Based Cleanser And Vitamin C
সোপ বেইজড ক্লিঞ্জার গুলোতে পিএইচ অনেক বেশি থাকে। দেখা যায় যেসব ক্লিঞ্জারগুলো ফেনা বেশি তৈরী করে সেগুলোতে পি এইচ লেভেল বেশি থাকে যেটা স্কিনের পিএইচ লেভেল এর সাথে ম্যাচ হয়না। তখন স্কিনে একনে বেড়ে যেতে পারে কিংবা ড্রাই হতে পারে। এর ফলে স্কিনে যখন আমরা ভিটামিন সি ইউজ করবো তখন সেটা স্কিন শুষে নিতে পারেনা বা অ্যাবজর্বড হয়না। তখন ভালোর বদলে খারাপ হতে পারে।
সুতরাং আমরা দেখলাম উপাদানসমুহ যা একত্রে ত্বকে ব্যাবহারযোগ্য নয়, এগুলা আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরী। উপাদানসমুহ যা একত্রে ত্বকে ব্যাবহারযোগ্য নয় সেটা জেনেই স্কিনকেয়ার করা উচিত।