ব্যস্ত জীবনের কোরিয়ান বিউটি কেয়ার ফর্মুলা
রূপচর্চা অনাগ্রহ আছে এমন নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্করই বটে। তবে হ্যাঁ সময়ের অভাবে রূপচর্চায় অনাগ্রহতা তৈরি হয়েছে এমন নারীর সংখ্যা বর্তমানে প্রচুর। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে ক্লান্ত শরীর চায় না অতিরিক্ত কোনো কাজের ধকল। কিন্তু খানিকটা সময় রূপচর্চায় না কাটালে পরে ত্বকে বিভিন্ন রোগের উপদ্রব শুরু হবে এবং তা এমনকি মরণঘাতি ক্যানসারেও রূপ নিতে পারে।
তবে বেশিরভাগ নারীরাই বিভ্রান্তি আর দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকে ঠিক কীভাবে, বা কোনো প্রোডাক্টটি ব্যবহার করতে হবে – এই জাতীয় প্রশ্নের জালে। কেননা মার্কেট জুড়ে হাজারটা প্রোডাক্ট, ব্র্যান্ড, আর একেকজন একেকরকমের কৌশল আর পদ্ধতির কথা শুনে বিভ্রান্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। যেজন্য পুরো প্রক্রিয়াটাই অনেকের কাছে অর্থপূর্ণ এবং একইসঙ্গে ঝামেলাপূর্ণ বলেই মনে হয়। ভয়ের কিছু নেই। কেননা আজকের আয়োজনটি মূলত এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই। নিত্যদিনের ব্যস্ত জীবনে কোন বিউটি কেয়ার ফর্মুলাতে মনোযোগী হওয়া জরুরী সেগুলো নিয়েই আজকের আলোচনা। তবে মনে রাখবেন, আপনার ত্বকের প্রয়োজন অনুসারে এটিকে কাস্টমাইজ করে নিবেন।
ক্লিনজার
স্কিনকেয়ার রুটিনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ এটি। ত্বককে যথাযথভাবে পরিষ্কার করলে ত্বকের পোরসগুলোর মধ্যে থাকা সমস্ত ময়লা, সিবাম এবং মেকআপের অতি ক্ষুদ্র অংশও অপসারণ হয়ে যায়। একদম সাতসকালেই এক পশলা পানিতে ত্বক যেমন সারাদিনের জন্য হাইড্রেট থাকে; ঠিক তেমনি রাত্রে চেহারায় জমে থাকা খাদও পরিষ্কার করে দেয়। তবে অনেক সময় এমনও হয় যে মেকআপ নিয়েই ক্লান্ত শরীর বিছানা খুঁজে। সেক্ষেত্রে মুখ পরিষ্কারের আগে মেকআপ উঠিয়ে নেয়া উচিত।
এক্ষেত্রে ক্লিনজিং বাম দারুণ কার্যকরী। আর যদি ক্লিনজিং জেল বা ফোম ব্যবহার করতে চান তাহলে আগে তা হাতের তালুতে নিয়ে ঘষে ফেনার দলা তৈরি করুন। এরপর সেই ফেনা মুখের উপর প্রয়োগ করে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। কারণ, অতিরিক্ত ঘর্ষনে ত্বকে উপকারের চাইতে ক্ষতি হবার সমূহ সম্ভাবনা আছে। কোরিয়ান স্কিনকেয়ার বিশেষজ্ঞরাই এই কথা বলেন যে, অতিরিক্ত ঘর্ষণে ত্বকে অত্যধিক গতিবেগ সৃষ্টি হয় যা ত্বক ক্ষতির কারণও হতে পারে।
টোনার
প্রথম ধাপ পেরিয়ে অনেকেই ভাবে যে, তাদের ত্বক হয়তো পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কার হয়ে গেছে। মোটেও তা ভাববেন না। সম্ভবত আপনার ত্বকের পোরসগুলোতে এখনো রয়ে গেছে ময়লা, সিবাম বা মেকআপের অবশিষ্ট। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ নিয়ে আসে টোনার। পরিষ্কার করার মূল প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে এটি এবং পরবর্তীতে আপনার ত্বকে অন্যান্য প্রোডাক্ট ব্যবহারের অনুমতি দেয় টোনার।
একটি কটন প্যাডে টোনার নিয়ে আঙ্গুলদিয়ে তা ছড়িয়ে দেন পুরোটা জুড়ে। এরপর চেহারার মাঝখান থেকে ধীরে ধীরে চারপাশে প্রয়োগ করতে থাকুন, যাতে সবদিকেই ভালোভাবে পরিষ্কার হয়। মনে রাখবেন, টোনার আপনার ত্বকের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে এবং ত্বককে শুষ্কতা ও পানিশূন্যতা থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়াও পরবর্তী কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টগুলো শুষে নেয়ার জন্য ত্বককে কার্যকরী করে তোলে।
সিরাম/এম্পুল
এবার হচ্ছে কনসেনট্রেটেড এসেন্স প্রয়োগের পালা। তবে হ্যাঁ বিউটি কেয়ারের এই ধাপটা আপনি চাইলেই ব্যক্তিগতকরণ করে নিতে পারবেন আপনার ত্বকের চাহিদা অনুযায়ী। আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী যে কোন সিরাম বা এম্পুল কিনে ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জ্বলতা বাড়ায়, অ্যান্টি-রিঙ্কেল, অ্যান্টি-এজিং ইত্যাদি, যেমনটা আপনার ও আপনার ত্বকের প্রয়োজন সেরকমটাই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ যেটাই ব্যবহার করেন আলতোভাবে চাপিয়ে প্রয়োগ করবেন অবশ্যই।
এখন ভাবতেই পারেন যে, সিরাম আর এম্পুলের মধ্যে তফাত আছে কি? হ্যাঁ অবশ্যই আছে। এসেন্স হচ্ছে টোনার আর সিরামের মধ্যে থাকা এক হাইব্রিড জিনিস। আর এম্পুল হচ্ছে সিরামের পর সেরা বিউটি কেয়ার কনসার্ন। সেসব অন্য একদিন আলোচনা করা যাবে। মূল প্রসঙ্গে কথা হোক। সিরাম/এম্পুল ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং তারুণ্যতা ফিরিয়ে আনতে ব্যাপক কার্যকরী।
আই ক্রিম
চোখ স্পর্শকাতর একটি অঙ্গ; তাছাড়া বয়সের ছাপটা সবার আগে চোখের আশেপাশেই নজরে পড়ে। তাই চোখের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে আপনাকে। কেননা, দেহের এই অঞ্চলটিতে কোনো সেবেসিয়াস গ্রন্থি না থাকায় প্রাকৃতিক তেল উৎপাদনও হয় না। তাই এটিকে হাইড্রেটেড এবং সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার ত্বকের প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী একটি আই ক্রিম বেছে নিতে হবে।
আই ক্রিম অনামিকা আঙ্গুলে নিয়ে তা চোখের চারপাশের হাড়ে আলতোভাবে প্রয়োগ করতে হবে। অক্ষিকোটরের ভেতর আর বাহির, উভয় হাড়েই ভালোভাবে প্রয়োগ করতে হবে আই ক্রিম। এছাড়া, চোখের চারপাশ জুড়েও মসৃণভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
ফেস ক্রিম
এতক্ষণের সকল পরিশ্রমকে সীলগালা করে দেয়ার মতোই এটি শেষ ধাপ। আপনার স্কিনকেয়ার বিধিতে ফেস ক্রিম প্রয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি আপনার ত্বককে সীল করে দেয় এবং সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। সমস্ত প্রোডাক্টকে সঠিকভাবে কাজ করার এবং ত্বকে ময়শ্চারাইজার আনার ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করে ফেস ক্রিম।
সারাদিনের ব্যস্ততায় এবং রোদ আর ধুলোবালির হাত থেকে বাঁচতে অতিরিক্ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের সুযোগ না থাকলেও, ময়শ্চারাইজারের আলাদা একটি স্তর চেহারায় থাকুক যা ত্বককে সুরক্ষিত রাখবে। একইভাবে আলতো করে ত্বকে ম্যাসাজ করবেন। ফেস ক্রিম গলা অবধি প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ, না ঘষে আলতোভাবে প্রয়োগ করবেন।
আর সবশেষে ব্যবহার করতে পারেন সানস্ক্রিন। সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দিতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে নিয়মিত।
লিংক:
📞 ত্বকের সমস্যার জন্য প্রোডাক্ট সাজেশন পেতে কল করুনঃ 01790 270066 অথবা ইনবক্স করুন। 🌐 ১০০% অরিজিনাল কোরিয়ান প্রোডাক্টঃ https://chardike.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © chardike blog 2021