মেকআপ একটা আর্ট, ভালো মেকআপ করার দক্ষতা যেমন অর্জন করতে হয় আবার কিছু টিপস ও জানা দরকার। শুষ্ক ত্বকে যদি ভালো করে মেকআপ অ্যাপ্লাই করতে না পারেন, অথবা মেকাআপ যদি ঠিক মত না বসে তাহলে কিন্তু সুন্দর লাগার থেকে বরং আরও খারাপ দেখতে লাগতে পারে আপনাকে।অনেক সময় ড্রাই স্কিনে মেকআপ ফেটে যেতে পারে অথবা মাঝ থেকে উঠে যেতে পারে, তবে যদি সহজ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়, তাহলে কিন্তু শুষ্ক ত্বকের অধিকারিরাও হয়ে উঠতে পারেন অপরূপা।
১. শুরুটা হোক স্ক্রাবিং দিয়ে
আপনার ত্বকের সবার উপরের সেলে তৈরি হওয়া মৃত কোষ সবার আগে তুলতে হবে। কারণ এতে করে আপনার স্কিন নরমাল এবং স্মুথ হবে যার কারণে মেকআপটি বসবে অনেক তাড়াতাড়ি। এর জন্য মুখে একটা মাইল্ড স্ক্রাব ব্যবহার করতে হবে, যা মেকআপ করার আগে ত্বকের উপর থেকে নিস্তেজ, মৃত কোষকে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য় করবে।
২. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
এসপিএফ-যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে ।ময়েশ্চারাইজিং আপনার প্রতিদিনের ত্বকের যত্নের রুটিনের অংশ হওয়া উচিত। বিশেষত যদি আপনার শুষ্ক হয়, তাহলে তার হাইড্রেশনের বিশেষ প্রয়োজন হয়! এক্ষেত্রে এসপিএফ-যুক্ত ময়েশ্চারাইজার লাগানো যেতে পারে,অথবা নরমাল ময়েশ্চারাইজারও লাগানো যেতে পারে, এমনকি শীতেও! আপনার ত্বকে হাইড্রেট করার পাশাপাশি তা চামড়া কুঁচকে যাওয়াকে হ্রাস করবে।
৩. সঠিক অ্যাপ্লিকেটরের ব্যবহার
মেকআপের অধিকাংশ সাফল্য আসে যদি সঠিক অ্যাপ্লিকেটর থেকে। এর অর্থ হল আমরা মুখে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে অনেক সময় হাত দিয়ে ব্লেন্ড করি কিন্তু তা কখনই করা যাবে না, এতে করে কাজের কাজ তো হয়ই না বরং হাইজিন মেইন্টেইন করা সম্ভব হয় না । আর এই কারণেই মেকআপ ব্লেন্ড করার জন্য সঠিক ব্রাশ ,স্পঞ্জ এবং ব্লেন্ডার ব্যবহার করাটা খুব জরুরী এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় সেটা হচ্ছে একজনের ব্রাশ কখনই অন্যজন ব্যাবহার করা যাবে না এবং ব্রাশ ,স্পঞ্জ ব্যাবহারের পর অবশ্যই ক্লিন করে রাখতে হবে যেন পরেরবার ব্যাবহার করার সময় আগের মেকআপ না লেগে থাকে।
৪. প্রাইমারের গুরুত্ব
যেকোন ত্বকের জন্য মশ্চারাইজার অথবা সান্সক্রিম ব্যাবহারের পর অবশ্যই প্রাইমার ব্যাবহার করতে হবে এতে করে আপনার পোরসগুলু মিনিমাইজ করতে সাহায্য করবে এবং মেকআপ স্কিনে ঠিকমত বসবে। সেক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন এবং আইশ্যাডো লাগানোর আগে প্রাইমার লাগাতে হবে। প্রাইমার আপনার স্কিনে মেকআপ করার জন্য একটা সুন্দর ক্যানভাস তৈরি করে এবং মেকআপকে নিজের জায়গায় থাকতে সহায়তা করে।
৫. স্কিনের ধরন অনুযায়ী ফাউন্ডেশন
শুষ্ক ত্বকে যখন ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার প্রসঙ্গ আসছে তখন অবশ্যই লিক্যুইড ফাউন্ডেশন বেছে নিতে হবে। কারণ পাউডার ফাউন্ডেশন লাগালে ত্বকে একটা প্যাচিনেস চলে আসতে পারে। ত্বকের সাথে মানানসই একটি ফাউন্ডেশন বেছে নিতে হবে সেক্ষেত্রে আপনি হাতের রঙের সাথে মিলিয়ে নিতে পারেন। যদি রেগুলার ব্যাবহারের জন্য হয় সেক্ষেত্রে মিডিয়াম কভারেজের ফাউন্ডেশন বেছে নিতে পারেন।
৬. পাউডার ব্যবহার করবেন না
ড্রাই স্কিনে ফাউন্ডেশন সেট করার জন্য কখনওই পাউডার ব্যবহার করা যাবে না। এতে করে লুকটা খুব কেকি (cakey) দেখতে লাগে, এরজন্য মেকআপ সেট করতে পাউডারের বদলে মেকআপ সেটিং স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।
৭. ক্রিম ব্লাশ
ব্লাশ এবং ব্রোঞ্জারের জন্য ক্রিমের ফর্মুলা ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রেও শুষ্ক ত্বকে পাউডার ব্লাশ ব্যবহার করলে আপনার ত্বক আরও শুষ্ক দেখাতে পারে। আর সেই কারণে ক্রিম বেসড ব্লাশ আপনার জন্য সেরা অপশন।সেক্ষেত্রে লিপ অ্যান্ড চিকস ও ব্যাবহার করতে পারেন।
৮. হাইলাইটার
ত্বকে গ্লো পেতে অবশ্যই ব্যাবহার করতে হবে হাইলাইটার কিন্তু দুঃখের বিষয়, শুষ্ক ত্বক কখনও কখনও নিস্তেজ দেখাতে পারে তাই হাইলাইটার এভয়েড করাটাই উচিত সেক্ষেত্রে ইল্যুমিনেটার ব্যাবহার করা যেতে পারে। আপনার গালের হাড়ের ওপর,নাকে,থুতনিতে অ্যাপ্লাই করুন লিক্যুইড হাইলাইটার। ভালো মানের হাইলাইটার ব্যবহার করলে আপনার মুখমণ্ডলে একটা প্রাকৃতিক গ্লো চলে আসবে। বিভিন্ন স্কিন টোনের জন্য আলাদা আলাদা হাইলাইটার বেছে নিতে পারেন।
৯. ম্যাট লিপস্টিক
যারা শুষ্ক ত্বকের অধিকারী, তাদের যে কেবল মুখের ত্বকই শুষ্ক এমনটা নয়, তাঁদের ঠোঁটও খুব শুষ্ক হয়। অনেক্ষেত্রে ত্বক শুষ্ক হলেও ঠোঁট অনেক সেন্সিটিভ অথবা ড্রাই হয়ে যায় সেক্ষেত্রে লিপস্টিক বাছতে হবে খুব সাবধানে। সুপার ম্যাট লিপস্টিক কখনওই অ্যাপ্লাই করবেন না। ড্রাই ঠোঁটে যদি ড্রাই লিপস্টিক লাগান তাহলে তা দেখতে মোটেও ভালোলাগবে না, বরং তা আপনার ঠোঁটের শুষ্কতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। এর জন্য ভালো ক্রিমি বা গ্লসি ধরণের লিপস্টিক বাছুন।অথবা ড্রাই লিপ্সটিক ব্যাবহারের আগে একটি লিপ বাম লাগিয়ে নিতে পারেন এতে ঠোঁট কখনই ড্রাই হবে না।
১০. ফ্রেশ দেখতে লাগার জন্য অ্যাপ্লাই করুন ফেস মিস্ট
মেকআপ করার পর অবশ্যই একটা ফ্রেশ লুক পেতে একটা ফেস মিস্ট অ্যাপ্লাই করুন। এমনকি এটি আপনার ভ্যানিটি ব্য়াগেও রাখতে পারেন। যখনই ত্বক একটু শুষ্ক অনুভূত হবে, তখনই একটু স্প্রে করে দিন। ফেস মিস্ট না থাকলে গোলাপজল এবং অ্যালোভেরা মিক্সট করেও মুখে রিঅ্যাপ্লাই করতে পারেন।এতে করে ত্বকের রেডিয়েন্স এবং হাইড্রেশন বজায় থাকে।