ত্বকের যত্নে সেন্টেলা এশিয়াটিকা যা বাংলায় থানকুনি পাতা নামে পরিচিত, ত্বক ও শরীরের বিভিন্ন ক্ষত সারাতে প্রাচীনকাল থেকেই এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন: চীন, ভারত এবং বাংলাদেশে ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে এখন আর থানকুনি পাতার গুণাগুণ নির্দিষ্ট কোনো দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং এটি ত্বক পরিচর্যার অন্যতম একটি উপাদানে পরিণত হয়েছে। অবশ্য তার যথেষ্ট কারণও আছে। সবচেয়ে বড় কারণ হলো থানকুনির হিলিং পাওয়ার বা ক্ষত সারানোর ক্ষমতা। এছাড়াও থানকুনি পাতার আরো যেসব কার্যকরী ক্ষমতা আছে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত বলাটাও জরুরী। চলুন জেনে নিই তাহলে…
ত্বক রাখবে সতেজ
থানকুনিতে আছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, যা ত্বকের ক্লান্তিভাব দূর করে, ত্বকের কোলাজেন তৈরীতে সাহায্য করেন। এর ফলে স্কিন ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি পায় মানে ত্বক যে কারনে টানটান থাকে, সেটা ঠিকঠাক রাখে। আবার এটি ফ্যাটি এসিড এবং অ্যামিনো এসিড সমৃদ্ধ, তাই ত্বকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাবও পূরণ করে। ফলে ত্বকের শুষ্কতা, রুক্ষতা তো দূর হয়ই, পাশাপাশি ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ও উজ্জ্বলতাও ফিরে আসে।
ড্যামেজড ত্বক রিপেয়ার করতে
থানকুনি ত্বকের ব্যারিয়ার সুরক্ষিত রাখতে খুব ভাল কাজ করে। যেহেতু এটি ত্বকের ক্ষত সারাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে, তাই বোঝাই যায় এটি ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পুনরায় তৈরী করতে সাহায্য করে। এতে ত্বকের বয়সের ছাপ দেরিতে পরে এবং বলিরেখা হালকা হয়। কেউ যদি থানকুনি পাতা সমৃদ্ধ স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট প্রতিদিন ব্যবহার করে তাহলে তার ত্বক সহজেই সেনসিটিভ হয়না এবং ড্যামেজ হয়ে যায়না। অন্যদিকে সেন্টেলা ত্বকের রোদে পোড়াভাব ও কালো ছোপ ছোপ দাগও হালকা করতে বেশ ভালো কাজ করে।
ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে
সেন্টেলায় আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ত্বকের ভেতরে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে, যার ফলে ত্বকের ব্রণ ও চুলকানির মতো সমস্যা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। আবার ত্বকে থাকা লালচে ভাব ও গরমের কারনে হওয়া র্যাশের সমস্যাও এটি সমাধান করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ফলে ত্বকের সেনসিটিভিটি কমে এবং ত্বক থাকে ঠান্ডা।
সব ধরণের ত্বকের বন্ধু
সেন্টেলা বা থানকুনির নির্যাস সব ধরনের ত্বকের সাথেই মানানসই। কারোর যদি অনেক তৈলাক্ত ত্বক হয়, তাহলে সেন্টেলা ত্বকের অতিরিক্ত তেল বা সিবাম কমাতে কাজ করবে এবং পোরস বা রোমকূপে যাতে তেল না জমে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবে। এতে ত্বকে ব্রণের আবির্ভাব কমবে।
আবার শুষ্ক ত্বকে সেন্টেলা ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখে। এতে করে ত্বকের খসখসে ও রুক্ষভাব দূর হয়।
সেনসিটিভ ত্বকে অনেক কিছুই কাজ করেনা বরং রিয়্যাকশন হয় এবং ত্বক জ্বালাপোড়া করতে থাকে। থানকুনি সেনসিটিভ ত্বকের জন্য একটি নিরাপদ উপাদান। কারন এটি ত্বককে কোনোভাবেই ট্রিগার করেনা।
বর্তমানে নানা ধরনের স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে সেন্টেলার ব্যবহার লক্ষনীয়। যেমন, ফেইসওয়াশ, সানস্ক্রিন, ময়েশ্চারাইজার, অ্যাম্পিউল ও সিরাম সহ অনেক কিছু। এর আরো একটি দারুন দিক হলো এটি সব ধরনের অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট, যেমন, রেটিনল, ভিটামিন সি, আলফা হাইড্রক্সি ও বেটা হাইড্রক্সি এসিড এবং নায়াসিনামাইড এর মতো উপাদান এর সাথে ভালো কাজ করে।
কোরিয়ার বিখ্যাত কিছু ব্র্যান্ড যেমন GFORS, IUNIK, INSFREE, COSRX, COS DE BAHA -তে থানকুনি পাতার নির্যাস সমৃদ্ধ প্রোডাক্টস পেয়ে যাবেন।