শীতকালে পা ফাটা একটি সাধারণ সমস্যা। শীতে পা ফাটার সমস্যা নতুন কিছু নয়। শুষ্ক আবহাওয়া, অতিরিক্ত ঠান্ডা, ধুলোবালির প্রকোপ ইত্যাদি কারণে এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায়, এছাড়াও শরীরে ভিটামিন, আয়রন ও ক্যালসিয়ামের অভাবেও হাত পা ফাঁটতে পারে। শীতের শুরু থেকেই ত্বকের বিশেষ যত্ন নেয়া দরকার। শীতে ময়েশ্চারের অভাবে হাত ও পায়ের ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। ফলে পা ফাটার সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
শীতে পা ফাটার কারণ কি?
কম পানি পান করা: পানি পান না করলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। ফলে পায়ের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।শুষ্ক পরিবেশে বেশি সময় কাটানো: শুষ্ক পরিবেশে পায়ের ত্বক আরও বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। সঠিক জুতা না পরা। খুব আঁটোসাটো বা খুব ঢিলেঢালা জুতা পায়ের ত্বকে চাপ সৃষ্টি করে এবং ফাটাতে পারে।ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, বা কিডনি রোগের মতো জটিল রোগ: এই রোগগুলো পায়ের ত্বকের রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয় এবং পা ফাটাতে পারে।
পা ফাটার সমস্যা-
পা ফাটলে পায়ের গোড়ালিতে যন্ত্রণা হতে থাকে। দীর্ঘদিন পা ফাটা থাকলে ইনফেকশন হতে পারে, পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়, পা ফুলে যায় এবং দৈনন্দিন চলাফেরা ব্যাহত হয়।
চিকিৎসা
একবার যদি গোড়ালি ফেটে যায়, তার নিয়মিত চিকিৎসা করতে হবে। প্রথমেই পা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। পা ফেটে গেলে বেশি ঘষা যাবে না, এতে রক্তপাত হতে পারে।
দুইভাবে চিকিৎসা করতে পারি-
১। ঘরোয়া উপায়ে।
২। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
শীতকালে পা ফাটা রোধে কিছু ঘরোয়া উপায়ও রয়েছে।
বেসন, দুধের সর, মধু, এবং হলুদ মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট গোড়ালিতে লাগিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেলুন।অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, বা অ্যালোভেরা জেল পায়ে লাগান।লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে গোড়ালিতে লাগান। নিয়মিত পা পরিষ্কার ও ময়েশ্চারাইজ করা। প্রতিদিন গোসল করার সময় পায়ে ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান। ময়েশ্চারাইজার পায়ের ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করবে এবং ফাটা রোধ করবে।
ভেজিটেবল অয়েল – অলিভ অয়েল, তিলের তেল, নারকেল তেল, সরষের তেল ও বাদাম তেল পা ফাটার সবচেয়ে সহজ সমাধান। ভালো ফলাফল পেতে রাতে ঘুমানোর আগে পা পরিষ্কার করে যেকোনো ভেজিটেবল অয়েল ম্যাসাজ করে ঘুমান।
চালের গুঁড়া – আধকাপ চালের গুঁড়া, এক চা-চামচ মধু ও এক চা-চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার একসঙ্গে মিশিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করুন। এছাড়াও অয়েনমেন্ট ও ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করলে দ্রুত সমাধান পাওয়া যাবে।
প্রতিকার
পা ফাটা প্রতিরোধের প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে ত্বক নরম ও মসৃণ রাখা। সেজন্য কিছু নিয়ম মেনে চললে পা ফাটা রোধ করা যেতে পারে-
১. খালি পায়ে চলা ফেরা না করা।
২. নরম জুতা পরা।
৩. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা।
৪. নারিকেল তেল মালিশ করা।
৫. নিয়মিত ভ্যাসলিন ব্যবহার করা।
পা ফাটা রোধে কেমন খাবার খাবেন-
শীতে ত্বকের সুরক্ষায় বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি ও রসযুক্ত ফলমূল খান। পায়ের গোড়ালি ফাটা সমস্যা শুধু সৌন্দর্যের সমস্যাই না, স্বাস্থ্যগত সমস্যাও বটে। পা ফাটা রোধে যেসব খাবার খাওয়া উচিত সেগুলি হল:
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: প্রোটিন ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে, যা ত্বককে মজবুত করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, এবং বাদাম।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে লেবু, কমলা, আম, ব্রোকলি, এবং টমেটো।
ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার: ভিটামিন ই ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে বাদাম, বীজ, তেল, এবং সবুজ শাকসবজি।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার: ভিটামিন এ ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক, এবং ডিম।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে মাছ, বাদাম, এবং বীজ।
এছাড়াও, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাও পা ফাটা রোধে সাহায্য করে। পানি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে, যা ত্বককে ফাটার হাত থেকে রক্ষা করে।
সারাবছরই আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সব ঋতুতেই পায়ের যত্ন নিন, গোড়ালি ফাটা প্রতিরোধ করুন এবং সুস্থ থাকুন।
📞 ত্বকের সমস্যার জন্য প্রোডাক্ট সাজেশন পেতে কল করুনঃ 01790 270066 অথবা ইনবক্স করুন। 🌐 ১০০% অরিজিনাল কোরিয়ান প্রোডাক্টঃ https://chardike.com/