লিপ টিন্টের নাম তো নিশ্চয়ই শুনেছেন। বর্তমানে এটার ক্রেজ শুধু দক্ষিণ কোরিয়া জুড়েই নয়; বরং সমগ্র এশিয়া জুড়েই চলছে। শুধু কি তাই? ইদানীংকালে তো এই ক্রেজটা ছড়িয়ে গেছে ওয়েস্টার্ন দেশগুলোতেও। এমনকি ইউটিউবে শুধু লিপ টিন্ট লিখে সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন প্রায় লাখখানেকের কাছাকাছি ভিডিও। তাহলে বুঝতে পারছেন লিপ টিন্ট বর্তমানে কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টের জগতে রাজত্ব করছে। কিন্তু লিপ টিন্ট সম্পর্কে কতটুকু জানেন আপনি? এই প্রশ্ন থেকেই তৈরি করা হয়েছে আজকের এই বিউটি ব্লগ। চলুন শুরু করা যাক।
লিপ টিন্ট কি?
ম্যারিয়াম ওয়েবস্টার ডিকশনারির মতে, টিন্ট শব্দটির বাংলা অর্থ আভা। কিংবা বর্ধিত করে বললে, একটু সামান্য বা ম্লান রঙকরণ। প্রকৃতপক্ষে লিপ টিন্টও ঐরকমই প্রভাব দেয় ঠোঁটে তাই এমন নামকরণ। পারফেক্ট গ্রেডিয়েন্ট লিপ তৈরি করার দক্ষতার জন্যই মূলত কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টের মধ্যে লিপ টিন্ট রাতারাতি বেশ সুনাম কামিয়েছে। এটাকে অম্ব্রে লিপও বলা হয়; কারণ এমন এক ধরণের গ্রেডিয়েন্ট বা আভা দেয়া থাকে যার ফলে আপনি ঠোঁটের যতটা কাছে যাবেন ততই আভা বিবর্ণ হতে থাকবে। একদম ম্যাজিকের মতোই কাজ করে এটা।
লিপ টিন্টকে লিপ স্টেইন্সও বলা হয়ে থাকে। এটা ম্যাটও হতে পারে আবার শাইনিও হতে পারে। একটা লিপস্টিক এবং লিপ টিন্টের মধ্যে মূল পার্থক্যটা হচ্ছে, লিপ টিন্ট দেয়ার কারণে আপনার ঠোঁট অনেক বেশি প্রাকৃতিক বা ন্যাচারাল লুকিং লাগবে। আবার লিপ স্টেইন্স এবং লিপ টিন্টের মধ্যে তফাত আছে। যেমন লিপ স্টেইন সত্যিকার অর্থেই ঠোঁটে রঙের দাগ দেয়; ঠোঁটের টিস্যুগুলোতে রঙকে প্রবেশ করিয়ে গাঢ় করে তোলে।
অন্যদিকে আবার লিপ গ্লোস বা লিপস্টিকে মোম এবং তেল থাকে; যার ফলে ঠোঁটের পরিধি থেকে বেরিয়ে যাবার একটা সমূহ সম্ভাবনা থেকেই যায়। লিপ টিন্ট লিকুইড বা জেল টাইপের হয়ে থাকে। এমনকি মুজ টেক্সচারেরও হয়ে থাকে লিপ টিন্ট। তাই ঠোঁটের জল বাষ্পে পরিণত হলেও রঞ্জক হিসেবে লিপ টিন্ট ঠোঁটে উজ্জ্বলতা ছড়ায়।
তাহলে এটা বুঝাই যাচ্ছে যে, লিপ টিন্ট সারাদিনের জন্য ঠোঁটের বিউটি সলিউশন। টিস্যু দিয়ে আর ঠোঁট মুছতে হবে না কিংবা চায়ের কাপে আর লিপস্টিকের দাগ লেগে থাকবে না। গ্রীষ্মের দিনের ছায়াতে লিপ টিন্টের কারণে ঠোঁট আরো বেশি ন্যাচারাল লুকিং এবং সতেজ দেখায়। লিপ টিন্টের রঙ এবং আভা দুইই এতটাই প্রাকৃতিকভাবে ঠোঁটে মিশে যায় যে বুঝার উপায় থাকে না।
লিপ টিন্টের প্রকারভেদ:
লিপ টিন্ট কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টের লিস্ট ঢুকেছে খুব বেশীদিন হয়নি কিন্তু এরিমধ্যে নানান রকম আর ধরন দিয়ে বিশ্বকে মাতিয়ে দিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে আবার অনেকগুলো মারাত্মক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
লিকুইড লিপ টিন্ট: লিকুইড লিপ টিন্টই সর্বাধিক জনপ্রিয়। ব্যবহার বা প্রয়োগ করাটাও যে সহজ। একটু গাঢ় রঙের জন্য, ঠোঁটের ভেতরের প্রান্ত দিয়ে লিপ টিন্ট ছুঁইয়ে দিয়ে এবার ঠোঁট দুটো কয়েকবার একসাথে মিলান যাতে রঙটি স্বেচ্ছায় ছড়িয়ে যেতে পারে। একটু হালকা রঙের জন্য, ঠোঁটের বাইরে উপরের দিকে লাগিয়ে একই নিয়ম পালন করতে হয়। তবে শুরুতে লিপ বাম বা ময়েশ্চারাইজার ঠোঁটে লাগিয়ে নিলে লিকুইড লিপ টিন্ট অতি দ্রুত শুকিয়ে যাবে না।
পিল-অফ লিপ টিন্ট: পিল-অফ লিপ টিন্ট একদমই নতুন। এই টিন্টের কারণে ঠোঁটের ত্বকে একটা দীর্ঘস্থায়ী স্টেইন বা দাগ পরে যায় রঙের যা ১২ ঘন্টা অবধিও স্থায়ী হয়। পুরু করে পিল-অফ লিপ টিন্ট ঠোঁটে লাগিয়ে মিনিট দশেক রেখে দিতে হয়। শুকিয়ে গেলে পরে আস্তরণটা টেনে তুলে ফেলতে হবে। ঠোঁট টিন্টের রঞ্জক পদার্থ গুলোকে শুষে নেবে। ফলে ঠোঁট শুকাবেও না এবং সরস আর সতেজ দেখাবে।
টিন্ট স্টিক: লিপস্টিক বুলেট বা লিপ বামের প্রতিদ্বন্দ্বী বলা চলে টিন্ট স্টিককে। এই টিন্টের টেক্সচার আসে অনেকটাই ক্রিমি ফ্লেভারের এবং বেশ হালকা পাতলা ধরনের। তাছাড়া, এটিতে মশ্চারাইজারের উপাদান নিহিত থাকায় লিকুইড লিপ টিন্টের চাইতেও এই টিন্টে ঠোঁট অনেক বেশি ভরাট এবং কোমল দেখায়। এমনকি এই টিন্ট ব্যবহার করলে পরে প্রাথমিক চকমকে ভাবটা চলে গেলেও এর প্রভাব রয়ে যায় সারাদিন।
ম্যাট লিপ টিন্ট: ম্যাট লিপ টিন্টের জনপ্রিয়তার কারণ হচ্ছে এতে অবিশ্বাস্য রকমের হালকা টেক্সচার থাকে যেজন্য ঠোঁটের উপর আলাদা কিছু ব্যবহার করা হয়েছে সেটা বুঝা যায় না। ঠোঁটে যেমন শুষ্কতা আসতে দেয় না তেমনি ঠোঁটের ভাঁজগুলোকেও করে তোলে অনেকটাই মসৃণ। চমৎকার ভেলভেটের মতো রঙ মসৃণ করে তোলে ঠোঁট জোড়া।
ব্যবহারবিধি:
লিপ টিন্ট যে ভার্সেটাইল বিউটি প্রোডাক্ট তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু ব্যবহারবিধি জানা থাকলে এর ভার্সেটাইল উপকারীতা গ্রহণ করা অনেকটাই কঠিন হয়ে যায়।
গ্রেডিয়েন্ট লিপ্স:
০১. ঠোঁটের অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে টিন্টটি প্রয়োগ করুন।
০২. রঙ ছড়িয়ে দিতে বেশ কয়েকবার ঠোঁট দুটো একসাথে লাগান।
০৩. ঠোঁটের বাইরের দিকের প্রান্তগুলো প্রশমিত করতে বিবি ক্রিম বা কনসিলার ব্যবহার করুন।
ডিফিউজ লিপস:
০১. প্রান্তগুলো এড়িয়ে ঠোঁটের বেশিরভাগ অঞ্চলেই হালকা করে প্রয়োগ করুন।
০২. রঙ ছড়িয়ে দিতে বেশ কয়েকবার ঠোঁট দুটো একসাথে লাগান।
ফুল কভারেজ:
০১. টিন্টের প্রান্ত দিয়ে ঠোঁটের আউটলাইন বা রূপরেখাসমূহতে প্রয়োগ করতে হবে।
০২. এরপর ঠোঁটের মাঝ থেকে শুরু করে প্রান্ত অবধি টিন্ট প্রয়োগ করতে হবে।
📞 ত্বকের সমস্যার জন্য প্রোডাক্ট সাজেশন পেতে কল করুনঃ 01790 270066 অথবা ইনবক্স করুন। 🌐 ১০০% অরিজিনাল কোরিয়ান প্রোডাক্টঃ https://chardike.com/
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © chardike blog 2021