শাওয়ার শেষে বের হয়ে এসে দেখলেন ত্বক একদমই সফট ও ময়েশ্চারাইজড লাগছে না। যে শাওয়ার জেলটি অনেক দেখে বুঝে কিনেছিলেন সেটির অ্যারোমাও বেশিক্ষণ থাকছে না। মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। ঠিক এমন মন খারাপের ঘটনা আমার সাথেও ঘটেছিল। এরপর কীভাবে দুটো প্রবলেমের সল্যুশন পেলাম জানতে চান? মাত্র একটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করে! প্রতিবার শাওয়ারে ময়েশ্চারাইজড স্কিন পাওয়া যায় এবং একই সাথে অ্যারোমাও থাকে অনেকক্ষণ – সেটা আমি বুঝেছিলাম এই প্রোডাক্টটি ব্যবহার করেই। চলুন তাহলে এর সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
শাওয়ার জেলই কেন, সাবান কেন নয়?
‘ত্বক পরিষ্কার করার জন্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাবান তো আমরা ইউজ করছি। আর সাবানের ঘ্রাণও অনেকের ভালো লাগে। তাহলে কেন সাবানের বদলে শাওয়ার জেল ব্যবহার করবেন?’ এর উত্তরে আমি বলব, সাবান ব্যবহার করতে ক্ষতি নেই, কিন্তু কখনো খেয়াল করেছেন সাবান দিয়ে গোসল করার পর ত্বক কেমন যেন শুষ্ক হয়ে আছে, আবার কিছু কিছু জায়গায় র্যাশ হচ্ছে? এটা সব সময় বা সবার ক্ষেত্রেই হবে তা নয়। তবে অনেকের ত্বকই সেনসিটিভ থাকে, ঋতু পরিবর্তনে ত্বকে সাবান স্যুট করে না। আবার সাবানে অ্যালকালাইন বা ফ্যাট থাকতে পারে, যার কারণে অ্যালার্জির সমস্যাও হতে পারে। এসব সমস্যা যেন না হয়, সেজন্য শাওয়ার জেল বেস্ট অপশন।
প্রতিবার শাওয়ারে ময়েশ্চারাইজড স্কিন পাওয়া কি সম্ভব?
অবশ্যই সম্ভব! কি বিশ্বাস হচ্ছে না? আমার নিজেরও ব্যাপারটি নিয়ে কিছুটা দ্বিধা ছিল। কারণ মনমতো এমন কোনো শাওয়ার জেল পাচ্ছিলাম না যেখানে সফট স্কিন পাবো। আর যেগুলোই ব্যবহার করি সেগুলোর কোনোটার অ্যারোমাই বেশিক্ষণ থাকে না। তাই শাওয়ার শেষে রিফ্রেশও লাগে না তেমন। ভালো ব্র্যান্ডের বাজেট ফ্রেন্ডলি শাওয়ার জেল খুঁজতে খুঁজতে চারদিকে’র ওয়েবসাইটে পেয়ে গেলাম স্কিনো স্ট্রবেরি সেন্টেড শাওয়ার জেল। এর আগে আমি তাদের স্কিনো রোজ সেন্টেড শাওয়ার জেলটি ব্যবহার করেছিলাম। সেটার অভিজ্ঞতাও খুব ভালো ছিল। এটি ব্যবহার করে কেমন লেগেছে সেটি সম্পর্কেই জানাচ্ছি এখন।
স্কিনো স্ট্রবেরি সেন্টেড শাওয়ার জেল (SKINO STRAWBERRY SCENTED SHOWER GEL)
ফ্রুট এক্সট্র্যাক্ট দিয়ে তৈরি কোনো শাওয়ার জেল এর আগে আমি ব্যবহার করিনি। তাই নেয়ার আগে ভাবছিলাম কেমন হবে। কারণ ফ্লাওয়ার এক্সট্র্যাক্ট দিয়ে তৈরি শাওয়ার জেলই সাধারণত বেশি ব্যবহার করা হয়। তবে স্ট্রবেরির গুণাবলী জানা থাকার কারণে এর প্রতি আমার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সত্যি বলতে বডির স্কিন প্রোপারলি ক্লিন করার পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজড রাখতে, রিফ্রেশিং ফিল পেতে এবং শাওয়ার শেষে লং টাইম অ্যারোমা থাকার জন্য এই শাওয়ার জেলটিকে এখন আমি হলিগ্রেইল বলতেই পারি। এর আরও একটি কারণ অবশ্য এর মেইন ইনগ্রেডিয়েন্ট। চলুন এবার এই সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।
শাওয়ার জেলের মেইন ইনগ্রেডিয়েন্ট
নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এর মেইন ইনগ্রেডিয়েন্ট স্ট্রবেরি। এই ফ্রুট এক্সট্র্যাক্টটির বেশ কিছু বেনিফিটস রয়েছে। যেমন-
- এতে আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি। যার কারণে স্কিন থাকে সফট ও নারিশড।
- স্ট্রবেরিতে থাকা নিউট্রিয়েন্ট স্কিন হেলদি ও গ্লোয়ি রাখতে সাহায্য করে।
- ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখে বলে ড্রাইনেস প্রিভেন্ট হয় এবং ত্বক থাকে মোলায়েম।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং স্কিন টোন ইমপ্রুভ করে।
স্ট্রবেরি অ্যারোমার সাথে রিফ্রেশিং শাওয়ার
স্কিনোর এই শাওয়ার জেলটি সম্পর্কে তো জানা হলো। প্রকৃতি আমাদের অঢেল দিয়েছে। আমরা যদি আমাদের সেলফ কেয়ারে এসব ন্যাচারাল উপাদানগুলো ব্যবহার করি, তাহলে বেনিফিট আমাদেরই। ঠিক এভাবেই স্ট্রবেরি অ্যারোমা যুক্ত শাওয়ার জেল বেনিফিট দেয় আমাদের ত্বকে। এর ব্যবহারে প্রতিবার শাওয়ারে ময়েশ্চারাইজড স্কিন যেমন পাওয়া সম্ভব, তেমনই লং টাইম পর্যন্ত অ্যারোমাও থাকবে। স্কিন হবে হেলদি ও গ্লোয়ি। এতে কোনো ধরনের হার্শ কেমিক্যাল নেই। একটি কথা মনে রাখবেন, কোনো ব্র্যান্ড যদি ক্লেইম করে তাদের প্রোডাক্ট ব্যবহারে আপনি রাতারাতি ফর্সা হয়ে যাবেন, তাহলে সেগুলো কথায় কান দিবেন না। কারণ এমন প্রোডাক্ট হয় না। আর যেগুলো হয় সেগুলোতে হার্শ কেমিক্যাল থাকে, যা ত্বকের জন্য খুব ক্ষতিকর। তাই যে কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রেই কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে। অপেক্ষা করতে হবে। ধীরে ধীরে বেনিফিট বুঝতে পারবেন।
এই শাওয়ার জেলটির বিশেষত্ব
ইনগ্রেডিয়েন্ট ভালো সেটা তো বললাম, কিন্তু এছাড়া আর কী কারণে এই শাওয়ার জেলটি আমি আপনাদের রেফার করছি? এবার সেগুলোই জানাচ্ছি-
১) স্ট্রবেরির যে মাইল্ড ও সুইট স্মেল, সেটি আমার খুব ভালো লাগে। আর তাই এই ফ্রুট এক্সট্র্যাক্ট দিয়ে শাওয়ার জেলটি বেছে নিতে একদম দেরি করিনি।
২) সাবান ব্যবহারে খুব বেশি ফেনা হয় না। অনেক সময় নিয়ে বার বার ঘষলে তবেই ফেনা তৈরি হতে পারে। শাওয়ার জেলে সেই ঝামেলা নেই। অল্প পরিমাণ জেল লুফাতে নিয়ে নিলে তা থেকেই প্রচুর ফেনা তৈরি হয়ে যাবে। আর এ দিয়েই ফুল বডি ক্লিন করা সম্ভব।
৩) আগেই বলেছি, এই শাওয়ার জেল স্কিন ময়েশ্চারাইজ করে। গোসল শেষে রিফ্রেশ তো লাগবেই, নিয়মিত ব্যবহারে বুঝতে পারবেন ত্বক হয়ে উঠছে গ্লোয়ি ও হেলদি। কিছুদিনের মধ্যেই স্কিন টেক্সচার ইমপ্রুভ হয়।
৪) সব বয়সীরাই ব্যবহার করতে পারবেন।
৫) স্কিনে জমে থাকা পল্যুটেন্ট, ডার্ট, এক্সেস অয়েল রিমুভ করে অর্থাৎ ডিপ ক্লিনজিং করে।
৬) দীর্ঘ সময় পর্যন্ত স্ট্রবেরি অ্যারোমা রয়ে যায়।
৭) বাজেট ফ্রেন্ডলি বলে কর্মজীবী ও শিক্ষার্থী সবাই কিনতে পারবেন।
৮) সব ধরনের ত্বকেই ব্যবহার যোগ্য।
ব্যবহারের নিয়ম
শাওয়ার জেল ব্যবহার করা খুব সহজ।
- বোতল থেকে অল্প পরিমাণ জেল লুফাতে ঢেলে নিন
- এবার পানি দিয়ে ফেনা তৈরি করুন
- ভেজা শরীরে জেন্টলি রাব করে নিন
- পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন
- প্রতিবার শাওয়ারে বোতল খুলে প্রোডাক্ট ঢেলে নেয়ার ঝামেলা নেই। শাওয়ার নেয়ার সময়ই আপনি ফিল করতে পারবেন স্কিনের স্মুথনেস।
প্যাকেজিং ও টেক্সচার
কোনো প্রোডাক্ট কেনার আগে সেটির প্যাকেজিং এ আমাদের নজর আগে যায়। দেখে যদি ভালো না লাগে তাহলে কেনার উৎসাহ কিছুটা কমে যায়। সেদিক থেকে আমি বলব স্কিনো পেরেছে কাস্টমারকে আকৃষ্ট করতে। স্বচ্ছ বোতলের গায়ে স্ট্রবেরির ডিজাইন করা। ডিজাইনে অতিরঞ্জিত কিছু নেই। যেটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। পরিমাণে ২২০ মি.লি.। স্বল্প পরিমাণ ব্যবহার করলে অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। জেইল বেইজড শাওয়ার জেল, গোলাপি রঙের। আমার তো বেশ ভালো লেগেছে এটি ব্যবহার করে।
এই তো জানিয়ে দিলাম, প্রতিবার শাওয়ারে ময়েশ্চারাইজড স্কিন পাওয়ার জন্য কোন প্রোডাক্টটি আপনার স্কিন কেয়ার রুটিনে অ্যাড করতে হবে। ময়েশ্চারাইজড, গ্লোয়িং ও হেলদি স্কিন পাওয়ার জন্য এবং লং টাইম অ্যারোমা ধরে রেখে রিফ্রেশিং শাওয়ারের এক্সপেরিয়েন্স পাওয়ার জন্য বেছে নিন স্কিনো ব্র্যান্ডের দারুণ এই শাওয়ার জেলটি। সেলফ কেয়ার ও মেকআপের বিভিন্ন প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন চারদিকে থেকে। চারদিকে’র দুটি আউটলেট রয়েছে বসুন্ধরা সিটি শপিং মল ও নারায়ণগঞ্জ এর চাষাড়াতে আল জয়নাল ট্রেড সেন্টারে। ফিজিক্যালি কিনতে চাইলে এই দুটি আউটলেট ঘুরে আসতে পারেন। আর ঘরে বসে প্রোডাক্ট হাতে পেতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন চারদিকে’র ওয়েবসাইট ও অ্যাপে।
ছবি – চারিদকে, সাটারস্টক