করোনা পরবর্তী সময়ে আমরা সবাই কমবেশি একটু ওজন বাড়িয়ে ফেলেছি। প্রায় এক বছরের মত দীর্ঘ সময় ঘরে থেকে ডালগোনা কফি, জিলাপী আর চকলেট কেকের উপর এক্সপেরিমেন্ট করে বেশ ভালো খাওয়া দাওয়াই করা হয়েছে। তাই এখন সবাই আবার আগের জীবনে ফিরে যেতে পারলেও, আগের ওজনে ফিরে যেতে একটু কষ্টই হচ্ছে। তাই এখন ওজন কমানোর তাড়ায় না খেয়ে থেকে নিজেকে কষ্ট দিয়ে উল্টো রোগ ব্যাধি বাড়িয়ে তুলছি। তাই ভুল পথে না এগিয়ে জেনে নিন কিভাবে কতটুকু খাওয়া দাওয়া করলে খুব সহজেই আগের ফিট জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।
১। ভাতের বিকল্প “Cauliflower Rice”
কথায় আছে, আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। আর ছোট থেকেই এই ভাতের উপর বেঁচে থাকার এই খাদ্যাভ্যাসকে হুট করে বিদায় দিতে অনেকটাই স্ট্রাগল করতে হয়। তাই ভাতের বদলে বেঁছে নিন ফুলকপির ভাত। এই ফুলকপির ভাতটা আবার কি জিনিষ? এটা মূলত ফিটনেস প্রিয় মানুষদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি রেসিপি। এখানে একটি আস্ত ফুলকপিকে ঝুরি করে চালের মত মিহি করা হয় এবং হালকা তেলে অল্প লবন, গোল মরিচ এবং পছন্দ মতো সবজী দিয়ে ফ্রাইড রাইসের মত করে রান্না করা হয়। ফুলকপিতে কোনো শর্করা না থাকায় এটি বেশ সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর একটি বিকল্প হয়ে উঠেছে।
২। ভাঁজা পোড়ার বদলে Baked খান
ভাঁজা পোড়া খেতে ভালো লাগে না এমন মানুষ খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। ডুবো তেলে কড়কড়ে বেগুন বা আলু ভাঁজা অথবা চিকেন ফ্রাই এর কথা মনে পড়লেই জিভে পানি এসে যায়। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে এসব খাবারকে এখন বিদায় জানাতে হবে। প্রতিদিনের খাবারে তেলের মাত্রা যতটা কমানো সম্ভব এখন সেই চেষ্টা করতে হবে। মাছ মাংস থেকে শুরু করে যেকোনো খাবার তেলে ভাঁজার বদলে চেষ্টা করুন একটু বেইক করে খেতে। এতে খাবারে তেলের মাত্রা কমানোর সাথে সাথে আপনার সময়ও বাঁচাবে।
৩। অল্প ক্ষুধা কমাতে স্বাস্থ্যকর খাবার
বিকালের বা সন্ধ্যার নাস্তায় সাধারণত আমরা সহজে হাতের কাছে পাওয়া যাবে এমন খাবার খেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কিন্তু এখানেই যত বিপত্তি। একটু মিষ্টি খাবার বা ভাঁজা পোড়া অথবা চা কফি খেতে যেয়েই অনেক গুলো বাড়তি ক্যালোরি আমাদের শরীরে চলে যায়। তাই বিকালের নাস্তায় বা অল্প ক্ষুধা সামলাতে যেয়ে একটু বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। চা কফির বদলে পান করুন গ্রীন টি। গ্রীন টি অনেকটা সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতেও বেশ উপকারী পানীয়। এছাড়া ড্রাই ফ্রুট বা এক মুঠো বাদাম আপনার ক্ষুধা কমাতে বেশ স্বাস্থ্যকর উপায় হতে পারে।
৪। ওটস দিয়ে তৈরি করুন মজাদার নাস্তা
এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে ওটস জনপ্রিয় খাদ্য না হলেও পশ্চিমা বিশ্বে এটি একটি বহুল পরিচিত একটি খাবার। তারা ব্রেকফাস্টে ওটস খেতে পছন্দ করে করে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তারা চাইলে সকাল ও রাতে ওটস খেতে পারেন। ওটস খেলে ক্ষিদা তো মিটবেই সেই সাথে আপনার ওজন বেড়ে যাবার ভয় নেই। বরং ওজন বাড়ার বদলে কমতে থাকতে।ওটে থাকা বিটা গ্লুকেন ফাইবার হাইলি ভিসকাস হয়‚ যে কারণে স্লো ডাইজেস্ট হয় আর অনেক সময় পেট ভর্তি রাখে।
৫। নিজেই বানিয়ে ফেলুন মজাদার সালাদ
একটা সময় আমরা সালাদ বলতে শুধু শসা, গাজর আর টমেটোর কথাই মাথায় আসতো। কিন্তু ইদানীং সালাদও হয়ে উঠেছে বেশ সুস্বাদু খাবার। অল্প কিছু মাংস বা একটা সিদ্ধ ডিমের সাথে নিজের পছন্দের কিছু সবজী নিয়ে বানিয়ে ফেলুন মজাদার সালাদ। সাথে একটু টকদই, লেবু কিংবা তেঁতুলের টক দিয়ে সালাদের স্বাদ আরো বাড়িয়ে তুলুন। চাইলে ব্যবহার করতে পারেন অল্প একটু চাট মশলা যা আপনার সালাদে এনে দিবে মজাদার স্বাদ।