৫ টি স্কিনের সমস্যা যা আমরা সচরাচর ফেস করি
ছোটোবেলায় স্কিন থাকে বেবি সফট। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে স্কিন বাইরের ধুলোবালির সংস্পর্শে এসে প্রচুর প্রবলেম ফেইস করে যা থেকে দেখা দেয় স্কিনের সমস্যা। জেনেটিক্যালি স্কিন টেক্সচার ভালো থাকতে পারে কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ ১৬ বছরের পর থেকেই স্কিনের নানা ধরনের প্রবলেম ফেইস করতে শুরু করে। মানুষ সবথেকে বেশী যেই প্রবলেম গুলো ফেইস করে সেগুলো হলো
- Acne
- Itchiness
- Sunburn
- Hyperpigmentation
- Rosacea
Acne কেন হয়
স্কিনে অনেক ছোটো ছোটো পোরস থাকে যেগুলোকে hair follicles বলা হয়। এগুলো যখন এক্সেস সেবাম আর ডেড স্কিন সেলস দিয়ে ব্লক হয়ে যায় তখন স্কিনে একনে প্রবলেম দেখা দেয়। স্কিনে বিভিন্ন ধরনের একনে দেখা দিতে পারে যেমন papules, pustules, nodules অথবা cysts। টিনএইজ এ যখন কেউ থাকে তখন তার Puberty পিরিয়ড চলে। একারনে testosterone নামক হরমোন নিঃসরণ অনেক বেশি বেড়ে যায়। তখন sebaceous glands যারা স্কিনে সেবাম প্রডিউস করে, তারা প্রয়োজনের বেশি সেবাম প্রডিউস করে। এর ফলে স্কিনে একনে দেখা দেয়।
ফ্যামিলিতে যদি অ্যাডাল্ট একনে জনিত সমস্যায় কেউ ভোগে তাহলে তার ছেলে মেয়েদের ও অ্যাডাল্ট একনে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ছেলেদের চাইতে মেয়েদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। কারন তাদের পিরিয়ড এর আগে ও প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাসে হরমোন অনেকভাবে চেইঞ্জ হয়। তখন একনে সমস্যা দেখা দেয়।
আবার, স্কিনে সব প্রোডাক্টস অনেকসময় স্যুট করেনা। তখন সেগুলো একনে ট্রিগার করে। অনেকে মেডিকেশনের মধ্যে থাকলে তার একনে হতে পারে। আবার হেভি স্মোকার হলে স্কিনে একনে হওয়ার সম্ভাবনা অনেক থাকে। একনে কন্ট্রোলে Benzoyl peroxide, Salicylic acid, Alpha-hydroxy acids (AHAs) যেমন Lactic acid
Mandelic acid, Glycolic acid, Retinol, Tea tree oil, Sulfur এসব ইনগ্রেডিয়েন্ট স্কিনে একনে কন্ট্রোলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রপার্টিজ হিসেবে কাজ করে।
Itchiness
ইচিনেস অনেক কারনে হতে পারে। স্কিন বেশী ড্রাই হয়ে গেলে স্কিন ফ্লেকি হয়, স্কিনে র্যাশ হতে পারে, অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনেও স্কিনে ইচিনেস হতে পারে। একটা সময় পর্যন্ত এই ইচিনেস কোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার পর চলে যায়, যেসব প্রোডাক্টে স্কিন সুথিং ইনগ্রেডিয়েন্টস থাকে। কিন্তু স্কিনে অনেক বেশী ইচিনেস দেখা দিলে ডার্মাটোলজিস্ট দেখানো ভালো।
ইনফ্ল্যামেটেড ও ইচিনেস প্রোন স্কিনকে সুথ করে এমন কিছু ইনগ্রেডিয়েন্ট স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করে নেয়া ভালো। যেমন Aloe Vera, Niacinamide, Licorice Extract, Green Tea, Centella Asiatica, Chamomile স্কিনের ইচিনেস, রেডনেস কমায়।
Sunburn
স্কিনে UV Rays অতিমাত্রায় প্রবেশ করলে স্কিনে সান স্পট পড়ে। এর সাথে সাথে স্কিনে ইচিনেস, রেডনেস বেড়ে যায়। স্কিন ড্রাই ও ফ্লেকি হয়ে যায়। কিছুদিন পর স্কিনের চামড়া উঠতে শুরু করে। সিরিয়াস কন্ডিশন হলে স্কিনে সমস্যা দেখা দেয়া ছাড়াও পুরো শরীরে এটার প্রভাব পড়ে।
স্কিন যাতে সানবার্নড না হয় এজন্য SPF যুক্ত সানস্ক্রিন ইউজ করতে হবে। চেষ্টা করবেন সূর্যের আলোর সংস্পর্শে কম থাকতে। বাইরে থাকা হোক কিংবা ঘরে, চেষ্টা করতে হবে অন্তত দু তিন ঘন্টা পর পর সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করতে হবে। এছাড়া মনিটরের সামনে বেশিক্ষন থাকা হলেও সানস্ক্রিন ইউজ করা রেকমেন্ডেড।
Chamomile Tea, Apple Cider Vinegar, Cucumbers, Milk, Aloe Vera, Oatmeal, Honey, Coconut Oil হোম রেমেডি হিসেবে বেশ ভালো কাজ করে। আবার Vitamin C, Niacinamide, Glycolic Acid ও সানবার্ন কমাতে দারুন কাজ করে।
তবে খুব সিরিয়াস অবস্থায় অবশ্যই ডার্মাটোলজিস্ট এর সাথে কথা বলে প্রোডাক্ট ইউজ করতে হবে।
Hyperpigmentation
হাইপারপিগমেন্টেশন মূলত তিন ধরনের হতে পারে। Melasma, Sunspots ও Post-inflammatory hyperpigmentation।
Melasma সাধারনত হরমোনাল চেইঞ্জ এর কারনে হয়ে থাকে। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় বা অন্য কোনো কারনে হরমোন এ চেইঞ্জ আসতে পারে। এ ধরনের হাইপারপিগমেন্টেশন ফেইস ও পেটের চারপাশে Melasma হতে পারে। আবার বডির যেকোনো জায়গাতেই হতে পারে।
Sunspots যেখানে পড়ে সেখানে হাইপারপিগমেন্টেশন দেখা দিতে পারে। হাত, পা বা মুখের কিছু অংশ সান অনেক সময় ধরে সান এক্সপোজড থাকলে এরকম হয়। ন্যাচারাল স্কিন টোনকে হাইপারপিগমেন্টেশন অনেকখানি ঢেকে দেয়।
আবার স্কিনে একনে ব্রেকআউট হলে স্কিনের অনেকটা জায়গায় Post-inflammatory hyperpigmentation দেখা দিতে পারে।
Hydroquinone, Licorice extract, Vitamin B-3 (niacinamide), Alpha hydroxy acids, such as Glycolic, Lactic, Citric, Malic অথবা Tartaric acid, Azelaic acid, Kojic acid, Salicylic acid, Vitamin C (in the form of l-ascorbic acid), Retinoids সানবার্ন ট্রিট করতে হেল্প করে।
তবে এসব মাইল্ড হাইপারপিগমেন্টেশন থাকলে বেশ তাড়াতাড়ি কাজ করে। স্কিনে অনেক বেশি পরিমানে হাইপারপিগমেন্টেশন থাকলে সেটা সারতে সময় নেয়। লেজার ট্রিটমেন্ট, কেমিক্যাল পিলিং ও হাইপারপিগমেন্টেশন দূর করতে হেল্প করে। আর হাইপারপিগমেন্টেশনের সমস্যা খুব বেশী মনে হলে একজন ভালো ডার্মাটোলজিস্ট দেখানো উচিৎ।
Rosacea
Rosacea র যেই সিম্পটম গুলো সাধারনত ফেইস ও নেক এর বিভিন্ন জায়গায় রেডনেস হিসেবে দেখা দেয়। স্কিনের যেসব জায়গায় এমন রেডনেস দেখা দেয় সেসব জায়গার স্কিন ড্রাই ও রাফ হয়ে যেতে পারে, স্কিনে ইরিটেশন ও দেখা দেয়। কোনো কোনো জায়গা ফোলা ফোলা হতে পারে। স্কিনে যদি অলরেডি Rosacea থাকে, তাহলে সানলাইট, অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা আবহাওয়া, স্পাইসি ফুডস স্কিনের রেডনেসকে ট্রিগার করতে পারে। আবার স্কিন একনে প্রোন বা সেনসিটিভ হলে স্কিনে রেডনেস দেখা দেয়।
সমাধান হিসেবে যা করা যায় তা হলো স্কিনে অবশ্যই সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করতে হবে। স্কিন সুথিং ইনগ্রেডিয়েন্ট যেমন Aloe vera, Vitamin C, Peptides, Cucumber, Carrot, Green Tea seed, Centella Asiatica, Alcohol এবং Fragrance ফ্রি যেসব প্রোডাক্ট সেগুলো ইউজ করতে হবে।
সুতরাং, আমরা যদি উপরোক্ত সমস্যাগুলো ফেস করে থাকি তবে আমরা উপরে উল্লিখিত প্রডাক্ট সমূহ ব্যাবহার করে সুফল লাভ করতে পারি। স্কিনের সমস্যা সবার জন্যি ঝামেলার। কেউ চায় না স্কিনের সমস্যা তাদের থাকুক। তাই আমরা উপরোক্ত স্টেপসমূহ ফলো করে স্কিনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি।