সংবেদনশীল ত্বক আপনার!
স্পর্শকাতর স্কিনকেয়ার রুটিন যেমন হওয়া উচিত
স্কিনকেয়ার রুটিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে সেনসেটিভ স্কিন বা সংবেদনশীল ত্বক। এমন অনেক উপাদানই আছে যা ত্বকের জন্য উপকারী। কিন্তু সেগুলো প্রয়োগে ত্বকে জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি, চুলকানি, লালচে ভাব ইত্যাদি হয়ে থাকে। এরকম হলে বুঝে নিতে হবে যে, ত্বক উক্ত প্রোডাক্টের সাপেক্ষে অত্যন্ত সংবেদনশীল। পারতপক্ষে সেই প্রোডাক্ট এড়িয়ে যেতে হবে ত্বকের সুরক্ষায়।
কিন্তু কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত আর কোনটা নয়, তাই নিয়ে শুরু হয় আরেক বিভ্রান্তি। আপনাকে সেই বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা দিতেই আজকের এই আয়োজন। সংদেবনশীল ত্বক বা সেনসেটিভ স্কিনকেয়ার রুটিন কেমন হওয়া উচিত তাই নিয়ে হবে আজকের আলাপ।
অয়েল-বেজড ক্লিনজার
অয়েল ক্লিনজার নিঃসন্দেহে দারুণ কার্যকরী ত্বকের জন্য। কিন্তু যাদের ত্বক সংবেদনশীল তারা কখনোই বাজারের প্রচলিত যে কোন অয়েল ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারবে না। সেনসেটিভ স্কিনের জন্য কোরিয়ান কোম্পানিগুলো নানান ধরনের অয়েল ক্লিনজার বানিয়ে থাকে। যেগুলোতে কোন কৃত্রিম রঙ, সিন্থেটিক সুগন্ধী, অ্যালকোহল, প্যারাবেন্স বা মিনারেল অয়েল থাকে না।
মানে হচ্ছে এই ধরনের প্রোডাক্টই মূলত সংবেদনশীল ত্বকের জন্য জরুরী। এই ধরনের প্রোডাক্টের ফর্মুলা পলিহাইড্রক্সি এসিড (পিএইচএ) দিয়ে তৈরি; যা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযোগী, হালকা এক্সফোলিয়েট করে এবং ত্বকের ব্ল্যাকহেড ও মৃত কোষ সরিয়ে দেয়। এই ধরনের দুটি প্রোডাক্ট হচ্ছে – দ্য বেনিলা ক্লিন ইট জিরো পিউরিটি এবং হ্যানস্কিন ক্লিনজিং অয়েল অ্যান্ড ব্ল্যাকহেড (পিএইচএ)।
ওয়াটার-বেজড ক্লিনজার
যেহেতু সংবেদনশীল ত্বক সব ধরনের স্কিনকেয়ারের প্রোডাক্টের জন্য উপযুক্ত নয়; তাই এটি ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। আবার অয়েল ক্লিনজার ব্যবহারের পর ডাবল ক্লিনজার হিসেবে অনেকেই পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করার কথা ভাবে না। তবে অয়েল ক্লিনজারের পর অবশ্যই ওয়াটার-বেজড ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা উচিত। এতে করে ত্বকের পোরসগুলো পরিষ্কার হয়। ওয়াটার বা জেল বেজড ক্লিনজার খুব কম পিএইচ দিয়ে বানানো হয় ফলে এটি ত্বক শুকিয়ে ফেলে না। বরং এতে থাকা হালকা এসিড ত্বকে এক্সফোলিয়েটের কাজ করে। এরকম একটি প্রোডাক্টের হচ্ছে – কোসআরএক্স লো-পিএইচ গুড মর্নিং ক্লিনজার।
এক্সফোলিয়েটর
সংবেদনশীল ত্বকের জন্য এক্সফোলিয়েটর অত্যন্ত ভীতিকর একটা শব্দ। কেননা, এক্সফোলিয়েটর করার সময় যে স্ক্রাব করতে হয় তাতে ত্বকে লালচে ভাব প্রকট হয়ে উঠে। তবে এক্সফোলিয়েটর সব ত্বকের জন্য দরকারী। কেননা, এটি ত্বকের ময়লা ও অবশিষ্টাংশ সরিয়ে দেয় যাতে করে পোরসগুলো সবসময়ই পরিষ্কার থাকে। শুধুমাত্র ক্লিনজার দিয়ে এসব পরিষ্কার সম্ভব নয়। সংবেদনশীল ত্বক হলেও সপ্তাহে অন্তত দুইদিন এক্সফোলিয়েট করা উচিত। এক্সফোলিয়েটর অস্বস্তিকর ত্বক শান্ত এবং লালচে ও জ্বালাপোড়া ভাব কমায়। সংবেনশীল ত্বকের জন্য নির্মিত এক্সফোলিয়েটরে থাকা ক্যামোমাইল এবং ক্যালেন্ডুলা প্রশমিত এবং শান্ত করে ত্বককে। এটি মিনারেল অয়েল, সরবিক এসিড, প্রাণীর উপাদান, সারফ্যাক্টট্যান্টস, প্যারাবেন্স এবং প্রোপিলিন গ্লাইকোল থেকে মুক্ত। এই ধরনের একটি প্রোডাক্ট হচ্ছে – আরই:পি বায়ো ফ্রেশ মাস্ক উইথ রিয়েল কামিং হার্ব।
টোনার
সংবেদনশীল ত্বকের টোনারগুলোতে আবার ত্বকে লালচে ভাব আনার একটা প্রবণতা থাকে। এই ধরনের টোনারের মূল উপাদান হচ্ছে ক্যালেন্ডুলা; যা ত্বককে শান্ত এবং নিরাময় করে। এবং এটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরিও বটে। এই ধরনের টোনার ত্বকের ভারসাম্য ঠিক রাখে। এরকম একটি টোনার হচ্ছে – নিওজেন রিয়েল ফ্লাওয়ার ক্লিনজিং ওয়াটার ক্যালেন্ডুলা।
এসেন্স
সংবেদনশীল ত্বকের প্রদাহ এবং লালচে ভাব কমাতে সকাল এবং রাতে এসেন্স ব্যবহার করতে হবে। এসেন্সে থাকে প্রাকৃতিকভাবে নিরাময়ের পুষ্টিগুণ – যেমন ৭৮% বার্চ গাছের নির্যাস, ক্যামোমাইল, এবং কলার বীজের নির্যাস ত্বককে পুষ্ট ও প্রশমিত করে। তাছাড়া, এটিতে প্যারাবেন্স, মিনারেল অয়েল এবং কৃত্রিম সুগন্ধী থাকে না। এরকম একটি প্রোডাক্ট হচ্ছে – ইনেচার বার্চ জুস হাইড্রো এসেন্স স্কিন।
সিরাম
সিরামে উদ্ভিজ্জ নির্যাস থাকে, যেমন – ব্রোকলি, সেলারি এবং গাজরের মূল, যা ত্বকের প্রাকৃতিক ব্যারিয়ারকে নষ্ট না করে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। এই ধরণের সিরামে লালচে ভাব না হয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। এরকম একটি সিরাম হচ্ছে – ক্লেয়ার্স রিচ ময়েস্ট সুদিং সিরাম।
আই ক্রিম
চেহারার সবচেয়ে সূক্ষ্ম ত্বক হচ্ছে চোখের চারপাশের অঞ্চল। উপরন্তু, সংবেদনশীল ত্বক হলে এমন আই ক্রিম বেছে নিতে হবে যেটি কোনো রকমের জ্বালাপোড়া করে না। যেটিতে এমন উপাদান থাকবে যা চোখের চারপাশ হাইড্রেট রাখবে, চোখের নীচের কালো দাগ দূর করবে এবং রিঙ্কেলসও মসৃণ করবে। এরকম দুটি প্রোডাক্ট হচ্ছে – এরবোরিয়ান সেভে দি ব্যাম্বু আই ম্যাটে এবং এরবোরিয়ান জিনসেং ইনফিউশন টোটাল আই।
ময়শ্চারাইজার
সংবেদনশীল ত্বকে লালচে ভাব প্রকট রূপ ধারন করলে জ্বালাপোড়াও শুরু হয়ে যায়। এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন না হতে চাইলে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার আবশ্যক। কেননা, ময়শ্চারাইজারে থাকে প্রচুর পরিমাণে সিরামাইডস যা ত্বকের ব্যারিয়ার গঠনে সাহায্য করে। এতে আরো থাকে জোজোবা তেল। তাই ময়শ্চারাইজার শুষ্কতা থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়। এরকম দুটি ময়শ্চারাইজারের নাম হচ্ছে – ক্লেয়ার্স রীচ ময়েস্ট সুদিং ক্রিম এবং বোটানিক ফার্ম অ্যাভোকাডো হানি রিচ লোশন।
সানস্ক্রিন
সংবেদনশীল ত্বকের জন্য কোরিয়ান ত্বকের যত্নের রুটিনে সানস্ক্রিন হচ্ছে সবচেয়ে শেষের ধাপ। সংবেদনশীল ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে জ্বালাপোড়া এবং প্রদাহ বাড়ে আর ত্বকে বার্ধক্যজনিত লক্ষণ দেখা দেয়। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার বাধ্যতামূলক। এরকম একটি সানস্ক্রিন হচ্ছে – মিসসা নিয়ার স্কিন ডাস্টলেস ডিফেন্স সান ব্লক।
শীট মাস্ক
শীট মাস্ক ত্বকের ব্যারিয়ারকে ধ্বংস না করেই সূক্ষ্ম রেখারগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে। জলজ উদ্ভিজ্জের নির্যাস থেকে তৈরি এসব শীট মাস্ক ত্বককে শান্ত ও কোমল রাখতে সাহায্য করে। এরকম একটি শীট মাস্ক হচ্ছে – ম্যানেফিট ব্লিং ব্লিং হাইড্রো জেল মাস্ক ইন সুদিং অ্যাকোয়া কোলাজেন।
লিংক:
📞 ত্বকের সমস্যার জন্য প্রোডাক্ট সাজেশন পেতে কল করুনঃ 01790 270066 অথবা ইনবক্স করুন। 🌐 ১০০% অরিজিনাল কোরিয়ান প্রোডাক্টঃ https://chardike.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © chardike blog 2021