হেলদি স্কিন আমরা সবাই চাই! বয়সের সাথে সাথে স্কিন চেইঞ্জ হতে থাকে। ছোটবেলার সফট স্কিন বড়বেলায় আর পাওয়া সম্ভব হয়না। আর মানুষের ছোটো থেকে বড় হওয়ার এই বিশাল প্রসেস এর প্রতিটি ছাপ স্কিনের পরিবর্তনের মাধ্যমেই বোঝা যায়। তাই চেষ্টা করতে হবে যাতে একটি প্রপার হেলদি লাইফস্টাইল মেইনটেইন করার। কারন লাইফস্টাইলের উপর নির্ভর করে স্কিন কতটা হেলদি থাকবে। আর হেলদি লাইফ লিড করার মানে হলো স্কিনে খুব তাড়াতাড়ি বয়সের ছাপ পড়েনা।
কারন স্কিন বডি টেম্পারেচার নিয়ন্ত্রন করে, ময়শ্চার লস কন্ট্রোল করে। আবার ব্যারিয়ার হিসেবে স্কিন বাইরের বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান শরীরের ভেতরে আসতে দেয়না। তবে নানা কারনে স্কিন চেইঞ্জ হয় যেমন, ডায়াবেটিস, জেনেটিকাল ইস্যু, এজিং, হরমোন এসবের প্রভাব স্কিনে পড়ে। তবে এসব কারোর হাতে থাকেনা। কিন্তু এসব চেইঞ্জ না করা গেলেও কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখা যায়।
আনহেলদি ডায়েট, অপর্যাপ্ত ঘুম, মেন্টাল স্ট্রেস এর মতো বিষয়গুলো স্কিনের জন্য ভালো কিছু না। আবার অনেক বেশী মেডিসিন নিলেও স্কিনে তার প্রভাব পড়ে। তবে বেশ কিছু হেলথ টিপস ফলো করতে পারলে স্কিন অনেকটা ভালো থাকে। এতে স্কিন দেখতে যেমন ভালো দেখাবে তেমন একটা ফিল গুড ভাবও চলে আসে।
হেলদি ডায়েট মেইনটেইন
স্কিন ভালো রক্তে গেলে সবচেয়ে আগে যেটা দরকার সেটা হলো একটি প্রপার ডায়েট মেইনটেইন করা। আজকাল অনেক ধরনের ইন্ডাস্ট্রি স্কিন এর ইয়ুথ ধরে রাখতে অনেক ধরনের প্রোডাক্ট বাজারে আনে যা স্কিন এজিং হতে দেয়না, স্কিন ভালো রাখে। তবে একটি বিষয় ভুলে গেলে চলবেনা যে স্কিনকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে হলে হেলদি ডায়েট অনুযায়ী প্রতিদিন খাবার খাওয়া অনেক প্রয়োজন।
ডায়েট চার্টে কিছু ফল রাখা যায় যেমন টমেটো, আম, আঙ্গুর, কমলা, লেবু এসব ফলে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টঅক্সিড্যান্ট থাকে যা স্কিনের জন্য খুব ভালো। সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ফ্যাটযুক্ত খাবারের পরিমানের চেয়ে ফাইবার যুক্ত খাবারের পরিমান যেন বেশি থাকে। এতে বডি বেশি সময় ধরে সেটা প্রসেস করবে। এতে করে বডিতে এক্সট্রা ফ্যাট জমতে পারেনা।
এছাড়াও ডায়েট লিস্টে Olive oil, Nuts, Berries, Green tea, Oily fish (যাতে আছে Omega 3) রাখা ভালো। আর সাথে প্রচুর পরিমানে সবুজ শাকসবজি ও ভিটামিন সি যুক্ত ফল রাখা জরুরী।
পর্যাপ্ত পানি পান করা
সুস্থ থাকতে হলে প্রচুর পরিমানে পানি খাওয়া খুব জরুরী। শরীরে পানির পরিমান কম হলে স্কিন ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়, স্কিন ড্রাই ও ফ্লেকি হয়ে যায়। তখন স্কিনে রিংকেলস ও ফাইন লাইনস দেখা দেয়। তাই হেলদি ও ময়শ্চারাইজড স্কিন ধরে রাখতে বডি ওয়েট এর অর্ধেক পরিমান পানি খাওয়াটা খুব জরুরী।
পর্যাপ্ত ঘুম
প্রপার ঘুম না হলে বডি স্ট্রেস হরমোন রিলিজ করে যা স্কিন এর অনেক প্রবলেমকে ট্রিগার করে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। এতে স্কিনের ন্যাচারাল কোলাজেন প্রোডাকশন ঠিক থাকে, স্কিন রিফ্রেশড থাকে।
স্ট্রেস থেকে দূরে থাকা ও এক্সারসাইজ করা
অনেক বেশি স্ট্রেস নিয়ে ফেললে স্কিনে একনে ব্রেকআউট ও অন্যন্য স্কিন কন্ডিশন খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই চেষ্টা করতে হবে স্কিনের সুস্থতা ধরে রাখার জন্য নিয়মিত yoga করা উচিৎ। প্রতিদিন কিছু সময় হাঁটার অভ্যেস থাকলে ব্লাড সার্কুলেশন ঠিক থাকে এবং এর ফলে স্ট্রেস অনেক কম হয়।
আর স্ট্রেস কম হলে স্কিন ও ভালো থাকে। তবে এক্সারসাইজ এর ফলে শরীর থেকে যে সেবাম বা ঘাম বের হয় তা অবশ্যই ক্লিন করে ফেলতে হবে।
স্মোকিং ও অ্যালকোহল অ্যাভয়েড করা
নিকোটিন ইনহেল করলে রক্তে অক্সিজেন এর পরিমান কমে যায়, রক্তনালি সংকুচিত হয়ে যায় এবং প্রিম্যাচিউর এজিং দেখা দেয়। অ্যালকোহল স্কিনকে ড্রাই, ফ্লেকি ও ডিহাইড্রেট করে ফেলে।
স্কিনের জন্য ঠিক প্রোডাক্ট বেছে নেয়া
স্কিন টাইপ অনুযায়ী স্কিনের জন্য পারফেক্ট প্রোডাক্ট চুজ করতে হবে। অয়েলি স্কিনে যে ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো ইউজ করা যায়, ড্রাই স্কিনে সেগুলো স্যুট করবেনা। আবার মেকআপ ইউজ করলে ডাবল ক্লিঞ্জিং করতে হবে। প্রতিদিন ইউজের জন্য প্রপার স্কিনকেয়ার রুটিন মেইনটেইন করা আরো ভালো।
স্কিনকে ময়শ্চারাইজড রাখা
স্কিন টাইপ অয়েলি, ড্রাই, কম্বিনেশন বা সেনসিটিভ হতে পারে। কিন্তু স্কিনকে সবসময় ময়শ্চারাইজড রাখতে হবে। কারন স্কিন ড্রাই থাকলে অনেক স্কিন প্রবলেম দেখা দিতে পারে যেমন স্কিনের ন্যাচারাল অয়েল ও ময়শ্চার এর মধ্যে ব্যালান্সড থাকেনা। ফলে রিংকেলস ও ফাইন লাইনস বেশ তাড়াতাড়ি পড়ে। বাইরের পলিউশন স্কিনের পোরস এর ভেতর ঢুকে পোরস ক্লগ করে দেয়। স্কিনকে যদি ডেইলি ময়শ্চারাইজড রাখা হয় তাহলে পোরস হাইড্রেট থাকে ফলে পোরস ক্লগ হয়না।
সানস্ক্রিন ইউজ করা
স্কিনে অবশ্যই সানস্ক্রিন ইউজ করতে হবে। কারন UV Rays স্কিনের মধ্যে দিয়ে শরীরের ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন সমস্যা তৈরী করে। তাই দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে কাটালে বা যদি বাসায় ও থাকা হয় তাহলেও SPF 30 বা SPF 70 আছে এমন সানস্ক্রিন ইউজ করতে হবে। এতে স্কিন প্রিম্যাচিউর এজিং এর হাত থেকে রক্ষা পাবে।