হাইড্রেটর নাকি ময়শ্চারাইজার?
হাইড্রেটর এবং ময়শ্চারাইজ কি এবং তাদের মধ্যকার পার্থক্য জানা জরুরি। আপনার ত্বক যেন সুস্থ, মসৃণ এবং উজ্জ্বল থাকে তা নিশ্চিত করতে জল কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। তাই স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে ত্বককে হাইড্রেট এবং ময়শ্চারাইজ রাখে এমন প্রোডাক্টগুলো বাছাই করাই বুদ্ধিমানের কাজ। হাইড্রেট এবং ময়শ্চারাইজার পরস্পর পরিবর্তিতভাবে ব্যবহার হলেও দুটি আসলে হুবহু একই জিনিস না। যদিও উভয়ই ত্বককে অতিরিক্ত পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। তবুও অনেকেই ধারণা করে থাকে যে দুটি হয়তো একই জিনিস। কিন্তু আসলে তা নয়। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক এই দুইয়ের মধ্যকার পার্থক্য।
হাইড্রেটর কি?
হাইড্রেশন হচ্ছে বাতাস থেকে ময়শ্চার শোষণ এবং তারপর ত্বকের শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে কোষগুলিকে জলের সঙ্গে মিশ্রিত করে; যাতে তা আরো বেশি ময়শ্চার এবং পুষ্টি শোষণ করতে সক্ষম হয়। একটি হাইড্রেটর (হায়ালুরোনিক এসিডের মতো) হিউম্যাকটেন্ট ব্যবহার করে ত্বকে জল আনতে সহায়তা করে থাকে। এই হিউম্যাকটেন্ট পরিবেশ থেকে আর্দ্রতা সংগ্রহ করে এবং ত্বকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা ত্বককে জল শোষণ করতে দেয়।
ময়শ্চারাইজার কি?
ময়শ্চারাইজিং হচ্ছে আর্দ্রতা আটকে রেখে ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষা তৈরি করে। এটা ত্বক থেকে জলের ক্ষরণ বন্ধ করে এবং ত্বককে রাখে নরম ও মসৃণ। ময়শ্চারাইজারে এমন তেল থাকে যা হাইড্রেশনকে আটকে রেখে ত্বকে জলের প্রবাহ ঠিক রেখে ত্বককে নরম, মসৃণ এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। প্রত্যেকের ত্বকেই একটি করে প্রাকৃতিক লিপিড (তেল) এর বেড় থাকে। কিন্তু যখন ত্বক শুষ্ক বা বার্ধ্যক্যজনিত হয় তখন লিপিড বেড় ভেঙ্গে যায়; আর ত্বকের স্বাভাবিক ময়শ্চারাইজার হারাতে থাকে।
হাইড্রেটর এবং ময়শ্চারাইজার দুটোর মধ্যে পার্থক্য কি?
হাইড্রেট এবং ময়শ্চারাইজ উভয়ই শুষ্কতা, ডিহাইড্রেশন এবং অকালেই বয়স্ক ভাবের লক্ষণগুলির সাথে লড়াই করার জন্য ত্বক পর্যাপ্ত জল পাচ্ছে কিনা তা সুনিশ্চিত করে থাকে। তা সত্ত্বেও দুটোর মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। তবে সেই পার্থক্যটা নির্ভর করে কিভাবে এটির ফলাফল অর্জন করা হচ্ছে তার উপর।
যখন আপনি একটি টপিকাল হাইড্রেটর ব্যবহার করবেন, তা আপনার কোষগুলোকে জলের সাথে মিশ্রিত করবে; এবং আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ও পুষ্টি গ্রহণ করার ক্ষমতাকে উন্নত করবে। অন্যদিকে, ময়শ্চারাইজার ত্বকের প্রতিরক্ষামূলক বাধ তৈরি করতে জলের ক্ষরণ বন্ধ করে এবং আর্দ্রতা আটকে রেখে ত্বককে নরম, মসৃণ এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে।
আপনার যদি ত্বক শুষ্ক থাকে তাহলে এর অর্থ হচ্ছে আপনার ত্বকে তেলের অভাব রয়েছে; এবং আপনার ময়শ্চারাইজার দরকার।
আপনার যদি ত্বক ডিহাইড্রেট থাকে তাহলে এর অর্থ হচ্ছে আপনার ত্বকে জলের অভাব রয়েছে; এবং আপনার হাইড্রেশন দরকার।
আপনার ত্বকের জন্য হাইড্রেটর এবং ময়শ্চারাইজার দুটোর মধ্যে কোনটা দরকারি, বুঝবেন কীভাবে?
এটা হচ্ছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রশ্ন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী বুঝে নিতে হবে ঠিক কোনটা দরকারি। নাকি দুটোই জরুরী? কিন্তু কীভাবে বুঝবেন তা? চলুন জেনে নেয়া যাক –
আপনার ত্বক যদি শুষ্কতার দিকে থাকে তাহলে এটা সহজেই অনুমেয় যে, ময়শ্চারাইজারের একটা ডোজই যথেষ্ট আপনার ত্বকের লাবণ্যতা এবং তারুণ্যতাকে ফিরিয়ে আনতে। তবে ত্বক যদি শুষ্কতার বদলে ডিহাইড্রেটের দিকে থাকে, তাহলে অবশ্যই হাইড্রেশন দারুণ কার্যকর হবে ত্বকের জন্যে। এখন প্রশ্ন আসে, বুঝবেন কীভাবে আপনার ত্বক ড্রাই নাকি ডিহাইড্রেটেড?
ত্বকের একটা প্রাকৃতিক লিপিড বাধ রয়েছে; যেটা সকল ধরনের ক্ষতি ও জলের নিঃসরণ থেকে নিজেকে রক্ষা করে। যদি আপনি শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের সমস্যা পড়েন তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, লিপিড যথেষ্ট পরিমাণে কোষ তৈরি করতে পারছে যাতে নিজেকে সুরক্ষিত করতে পারে। আর ঠিক এখানটাতেই চলে আসে ময়শ্চারাইজারের নাম।
অন্যদিকে, যদি আপনার চেহারা নীরস ও নিষ্প্রভ এর দিকে থাকে, এবং ত্বকের ভাঁজ ও দাগগুলো আরো স্পষ্ট হতে শুরু করে, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, আপনার ত্বক ডিহাইড্রেশনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। মানে হচ্ছে কোষগুলো সব শুকিয়ে গেছে এবং জলের অভাবে দুর্বল বা মারা যাচ্ছে। ঠিক এখানটাতেই আসে হাইড্রেশনের নাম।
সঠিক হাইড্রেটর বা ময়শ্চারাইজার কীভাবে বাছাই করবেন?
হাইড্রেট করার জন্য প্রচুর পরিমাণে জল পান করার কোন বিকল্প নেই। তবে ডিহাইড্রেটেড ত্বকের জন্য টপিক্যাল হাইড্রেটর দরকার যা কোষগুলোতে জলের প্রবাহ ঠিক রাখে। ন্যাচারাল হিউম্যাকটেন্ট সময়ের সাথে সাথে ত্বককে হাইড্রেট করার ক্ষমতাকে উন্নত করে থাকে। তাই এমন সব প্রোডাক্ট বাছাই করতে হবে যেগুলোতে হায়ালুরোনিক এসিড, অ্যালো, মধু, আলফা হাইড্রক্সি এসিড এবং সামুদ্রিক নির্যাস আছে। এছাড়া, সিনথেটিক হিউম্যাকটেন্ট, গ্লিসারিন, ইউরিয়া এবং প্রোপিলিন গ্লাইকোনের প্রতি নজর রাখতে হবে।
ময়শ্চারাইজারের ক্ষেত্রে, এর ফর্মুলা এবং উপাদানগুলোর মধ্যে ব্যাপক ভিন্নতা রয়েছে। কেননা, ময়শ্চারাইজার হালকা বা ভারী হতে পারে বিভিন্ন ঋতু এবং বিভিন্ন ত্বকের অনুপাতে। উষ্ণ, ঘামযুক্ত বসন্ত এবং গ্রীষ্মের দিনগুলোতে হালকা ওজনের জেল বা লোশন ব্যবহার করা যায়। তবে শুষ্ক, ঠাণ্ডা এবং শীতল আবহাওয়ায় ভারী কিছু যাতে সিরামাইড, তেল (নারিকেল ও বাদাম), বাটার (শিয়া ও কোকোয়া), এবং ডাইমেথিকন থাকে। এই উপাদানগুলো শুধুমাত্র পুষ্টিকর ও ময়শ্চারাইজিং প্রবাহের জন্যই নয়; বরং এগুলো বার্ধক্যজনিকত লক্ষণ এবং রেডিক্যাল ডেমেজের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি যোগায়।
ব্রণজনিত ত্বকের জন্য হালকা, তেলমুক্ত ময়শ্চারাইজার লোশন হিসেবে বেশ ভালো কাজে দেয়। এগুলোতে তেল কম থাকে এবং জল বেশি থাকে। কম্বিনেশন ত্বকের জন্য লোশন বা ক্রিমই ঠিক আছে; তবে সাথে শুষ্ক ত্বকের জন্য সিরাম বা ইমোলয়েন্ট ক্রিম পারফেক্ট। ভালো ফলাফলের জন্য সানস্ক্রিনের আগে সকালে এবং রাতে ব্যবহার করতে হবে ময়শ্চারাইজার এবং হাইড্রেশন।
লিংক:
📞 ত্বকের সমস্যার জন্য প্রোডাক্ট সাজেশন পেতে কল করুনঃ 01790 270066 অথবা ইনবক্স করুন। 🌐 ১০০% অরিজিনাল কোরিয়ান প্রোডাক্টঃ https://chardike.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © chardike blog 2021