স্কিন কেয়ারে আমরা যেসব ভুল করে থাকি

স্কিনকেয়ারে ভুল

আজকাল কমবেশি আমরা সকলেই স্কিন কেয়ার নিয়ে বেশ সচেতন। স্কিনকেয়ারে ভুল আর সচেতন হবোই না কেনো বাইরের ধূলা বালি, পলিউশন আর প্রখর রোদ ত্বকের যে বেহাল দশা সৃষ্টি করে নিয়মিত ১০ মিনিট সময় ব্যয় করতেই হয়। আর এই স্কিন কেয়ার করতে যেয়ে আমরা প্রতিদিন কত ধরণের এক্সপেরিমেন্ট করে বসি। তবে ইন্টারনেটের যুগে যেকোনো ধরণের তথ্য বেশ সহজলভ্য হওয়ায় অনেক সময় আমরা বেশ কিছু ভুল তথ্য বিশ্বাস করে বসি আর সেসব এক্সপেরিমেন্ট করতে যেয়ে ত্বকের উল্টো ক্ষতি করে বসি। তাহলে চলুন আজ জেনে নেই আমরা স্কিনকেয়ারে ভুল কি কি এবং আমরা কোন ভুল গুলো করে থাকি।

১। সরাসরি লেবু ব্যবহার করা

বাসায় তৈরি যেকোনো ফেইস প্যাক বা উপটান ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক সময় লেবু ব্যবহার করে থাকি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আমরা ন্যাচারাল ব্লিচ হিসেবে ত্বকে সরাসরি লেবু ব্যবহার করে থাকি। আর এখানেই আমাদের ভুলটা হয়ে থাকে। লেবুতে আছে সাইট্রিক এসিড যা কোনোভাবেই সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা উচিৎ নয়। এতে ত্বক জ্বালাপোড়া বা র‍্যাশের সমস্যা দেখা দিতে পারে, এছাড়া লেবু ব্যবহারের পর সূর্যের সংস্পর্শে গেলে তা থেকে ত্বক পুড়েও যেতে পারে। ত্বকের স্বাভাবিক কোলাজেন নষ্ট হয়ে ত্বকের বলিরেখা দেখা দিবে।

২। নারিকেল তেলের ব্যবহার

রূপচর্চায় নারিকেল তেলের ব্যবহার সেই প্রাচীন যুগ থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে। চুল পড়া রোধে, চুলকে মজবুত ও কোমল বা ঘন করতে নারিকেল তেলের তুলনা হয় না। বলা যায় চুলের যেকোনো সমস্যার একটাই সমাধান, নিয়মিত নারিকেল তেল ব্যবহার করা। এছাড়া হাত পা ফাটা বা রুক্ষ্মতা দূর করতে এবং উজ্জ্বল ভাব আনতে নারিকেল তেলের থেকে ভালো কোনো ময়েশ্চারাইজার হয় না। কিন্তু আমরা অনেকেই মনে করি নারিকেল তেল আমাদের মুখে ব্যবহারের জন্যও বেশ ভালো। এমনকি অনেকে তো মনে করেন নারিকেল তেল একনের সমস্যা সমাধানে বেশ উপকারী। তবে এটা পুরোটাই একটি ভ্রান্ত ধারণা। আসলে নারিকেল তেল এর উল্টো কাজ করে। নারিকেল তেল একট comodogenic উপাদান যা সরাসরি বা এমনকি কোনো ফেইস প্যাকের সাথেও ত্বকে ব্যবহার করলে সাথে সাথে আমাদের রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায় এবং একনের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে ফাঙ্গাল একনের ক্ষেত্রে এটি বেশ ক্ষতিকর একটি উপাদান।

৩। বেকিং সোডা

আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে ত্বকের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বেকিং সোডা ব্যবহারের প্রচলন দেখে আসছি। এটা একদমই ভুল একটি তথ্য। বেকিং সোডা ব্যবহারে ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ লেভেল নস্ট হয় ফলে ত্বকের সিবাম প্রোডাকশন বেড়ে যায় এবং ত্বকে পোরস ও একনের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ত্বকের ব্যারিয়ার নষ্ট করে ত্বককে ড্যামেজ করে দেয় এবং অল্প বয়সেই বলি রেখা বা ফাইন লাইন দেখা দেয়।

৪। রসুন

আমরা অনেকে ব্রণের সমস্যা দূর করতে রসুন ব্যবহার করে থাকি। রসুনে কিছু এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং এন্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান আছে যা ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। কিন্তু এর সাথে রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন যা সরাসরি ত্বকে ব্যব্বহার করলে চামড়া পুড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। এছাড়া রসুনের রস ব্যবহারে হাইপা পিগমেন্টেশনের সমস্যা দেখা দেয় ফলে ওই স্থানটি কালো হয়ে যায়। তাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে রসুনের টিপস কাজে লাগলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর উল্টোটা হয়। তাই কোনো রকম রিস্ক না নিয়ে রসুন ব্যবহার না করাই শ্রেয়।

৫। টুথপেস্ট

বেকিং সোডার মতই এই টুথপেস্ট হ্যাকসগুলো আমরা ইউটিউবেই দেখে থাকি। কিন্তু এটিও আসলে ঠিক নয়। টুথপেস্টে এমন কোনো এন্টি অক্সিডেন্ট বা এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান নেই যা আপনার একনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। তাই না জেনে কখনোই এই ভুলটি করতে যাবেন না।

সুতরাং আমরা দেখলাম যে আমরা কীরকম ভুল প্রতিনিয়ত করে থাকি। উপরোক্ত পাঁচটি ব্যাপার যেমন সরাসরি লেবু ব্যাবহার না করা, নারিকেল তেল ব্যাবহার করা, বেকিং সোডা ব্যাবহার করা, রসুন ব্যাবহার করা ও টুথপেস্ট ব্যাবহার করা এগুলো এড়িয়ে চললে আর সমস্যা হওয়ার কথা না। স্কিনকেয়ারে ভুল করলে সেটা যাতে ব্যাপক না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

2 I like it
0 I don't like it

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.