নতুনদের স্কিনকেয়ার রুটিন যেমন হওয়া উচিত

নতুনদের স্কিনকেয়ার রুটিন

নতুনদের স্কিনকেয়ার রুটিন যেমন হওয়া উচিত

অনেকেরই ধারণা, স্কিনকেয়ার হচ্ছে সংস্কৃতির একটা অংশ। তাই, ত্বক সমস্যায় আক্রান্ত হবার পূর্ব থেকেই এর যত্ন নেয়া উচিত। কোরিয়ানরা এইক্ষেত্রে নিজেদেরকে বিউটি ও স্কিনকেয়ার একদম প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে মাত্র অল্প কয়েক দিনেই। সেই জন্যই সারা দুনিয়ার মানুষ এখন কোরিয়ান স্কিন কেয়ারে রুটিনেই বেশি ভরসা করে থাকে। কেননা, তাদের রুটিনের কারণে ত্বক থাকে হাইড্রেটেড, উজ্ব্বল এবং সতেজ। তবে স্কিনকেয়ারে যারা নতুন তারা কীভাবে কি করবে? নতুনদের স্কিন কেয়ার রুটিন কেমন হওয়া উচিত তাই নিয়ে আজকের আলোচনা।

অয়েল-বেজড ক্লিনজার  

ডাবল ক্লিনজারের প্রথম ধাপ হচ্ছে অয়েল ক্লিনজার। কেননা, এতে অতি সহজেই ত্বকের ময়লা এবং আবর্জনা পরিষ্কার হয়। এছাড়াও, এটিতে ব্রণের চিকিৎসা এবং অতিরিক্ত সিবাম অপসারণ করতে রয়েছে চা গাছের তেলের উপাদান। এমনকি শুষ্ক ত্বকের লোকেদের স্কিনের জন্যও এই ক্লিনজার বেশ উপকারী। শুকনো মুখে অয়েল ক্লিনজার মেখে আলতোভাবে পুরো চেহারায় ঘষুন। ক্লিনজারের নমনীয়তার জন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।

ওয়াটার-বেজড ক্লিনজার 

ডাবল ক্লিনজারের দ্বিতীয় এবং শেষ ধাপ হচ্ছে ওয়াটার-বেজড ক্লিনজার। অয়েল ক্লিনজারের মাধ্যমে ত্বকের প্রথম স্তরের ময়লা এবং মেকআপের অবশিষ্টাংশ মুছে যায়। যা রয়ে যায় তার পুরোটাই সরিয়ে দেয় ওয়াটার-বেজড ক্লিনজার। প্রথম ধাপের তেলও ধুয়ে ফেলে এই ওয়াটার-বেজড ক্লিনজার। ক্লিনজার হাতে নিয়ে তা পানির সঙ্গে মিশিয়ে ফেনা তৈরি করে মুখে লাগাতে হয়। এরপর হালকা গরম পানি মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

এক্সফোলিয়েট 

সবসময়ই যে এক্সফোলিয়েট করতে হবে এমন কোন কথা নেই। বিশেষ করে যদি ত্বক হয় সংবেদনশীল। মসৃণ ত্বকের জন্য সপ্তাহে এক কি দুবার এক্সফোলিয়েট করাই যথেষ্ট। এক্সফোলিয়েটের ফলে ত্বকের মৃত জমাট বাঁধা কোষগুলো সরে যায়। এতে করে স্কিনকেয়ারের অন্যান্য প্রোডাক্টগুলো খুব সহজেই ত্বকে মিশে গিয়ে কার্যক্রম শুরু করতে পারে। এক্সফোলিয়েন্ট ত্বকে আলতো করে প্রয়োগ করুন। যদি এটা ওয়াশ-অফ মাস্ক হয় তাহলে ৫-১০ মিনিট মুখে রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

টোনার 

টোনার ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে। পরবর্তীতে স্কিনকেয়ারের জন্য যা যা উপাদান ত্বকে আসবে তা শোষিত করার জন্য ত্বককে প্রস্তুত করে রাখে। কোরিয়ান টোনারের ফর্মুলা খানিকটা ঘন হয়। ফলে ত্বক হাইড্রেট থাকে। টোনার থেকে হাতের তালুতে ২/৩ ফোঁটা নিন এবং সরাসরি মুখে প্রয়োগ করুন। অথবা কটন প্যাডে ভিজিয়ে নিয়ে তাও ব্যবহার করা যেতে পারে।

এসেন্স 

কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রুটিনের মধ্যমণি এবং কোরিয়ান ও ওয়েস্টার্ণ স্কিনকেয়ারের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে এসেন্স। সিরামের হাইব্রিড ফর্মুলা এসেন্স হচ্ছে এমন একটি প্রোডাক্ট, যা আপনার ত্বকের পুষ্টিগুণকে বুস্ট করে থাকে। শুরুতেই একদম পারফেক্ট এসেন্স খুঁজে পাওয়াটা একটু কষ্টকর। কেননা, এসেন্সে থাকে বিভিন্ন ধরনের এসিড এবং শক্তিশালী উপাদান; যা সকল ত্বকের জন্য মানানসই নাও হতে পারে। এসেন্স হাতে নিয়ে হালকা করে চাপড় দিয়ে দিয়ে ত্বকে প্রয়োগ করতে হয়। ছড়ানো বা ঘষা উচিত নয়।

সিরাম 

নিস্তেজ ত্বক, বড় পোরস, পিগমেন্টেশন, রিঙ্কেলস এবং ব্রণ – সকল সমস্যার অন্যতম সমাধান হিসেবে কাজ করে সিরাম। সিরামে স্কিনকেয়ার এ অনেক সক্রিয় উপাদান থাকে। পেপটাইড কোষের বৃদ্ধি এবং পুনরূদ্ধারে কাজ করে; এছাড়া সিরামে ভিটামিন সি, এইচসিএ (হাইড্রোসাইট্রিক এসিড) এবং এএইচএএস (আলফা হাইড্রক্সি এসিড) থাকে। ত্বকে কোলাজেনের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে সিরাম। ড্রপার দিয়ে কয়েক ড্রপ সিরাম নিয়ে আলতোভাবে ঘষে মুখে লাগাতে হয়। সপ্তাহে ১/২ বার ব্যবহার করা যায়।

শীট মাস্ক 

অনেকেই বলে থাকে যে, এসেন্স যদি হয় কোরিয়ান স্কিনকেয়ারের মধ্যমণি; তাহলে শীট মাস্ক হচ্ছে মধ্যমণির আত্মা। শীট মাস্কগুলো ত্বকের জন্য সর্বোচ্চ পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। শীট মাস্কে প্রচুর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন উপাদান থাকে যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত জরুরী ও কার্যকরী। তাছাড়া, ত্বকের হাইড্রেশন নিয়ন্ত্রণে রাখে শীট মাস্ক। শীট মাস্ক ব্যবহারের নিয়ম হচ্ছে মাস্কটা প্যাকেজ থেকে বের করে মুখে লাগিয়ে কেবল ১৫/২০ মিনিট বসে থাকতে হবে।

আই ক্রিম 

চোখের চারপাশের ত্বক বেশ পাতলা এবং সুক্ষ্ম হয়ে থাকে। যেজন্য এখানকার যত্ন নিয়ে বেশ যত্ন সহকারেই। হাইড্রেশন এবং অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য আই ক্রিমের কোনো তুলনা হয় না। চোখের নীচের কালো দাগ দূর করতেও আই ক্রিম দারুণ কার্যকরী একটি প্রোডাক্ট। অরবিটাল হাড়ের চারপাশ জুড়ে আই ক্রিম লেপে দিতে হবে, ভুলেও ঘষা যাবে না।

ময়শ্চারাইজার 

এতগুলো ধাপ পেরনোর পর ত্বক হাইড্রেটেড থাকে এবং বেশ আর্দ্র দেখায়। তখন আসে ময়শ্চারাইজারের কাজ। উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হাইড্রেশন অত্যন্ত জরুরী। আর ত্বকে এই হাইড্রেশন সরবরাহ করে থাকে ময়শ্চারাইজার। লোশন, জেল এবং ক্রিম সব ধরণের উপায়েই ময়শ্চারাইজার তৈরি হয়ে থাকে। ত্বকের বলিরেখা মসৃণ করতেও ময়শ্চারাইজার দারুণ কার্যকরী। দিনে এবং রাতে মুখে ও ঘাড়ে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। হাতে নিয়ে আলতোভাবে ঘষতে হয় সমস্তটা জুড়ে।

সান প্রটেকশন 

সূর্য থেকে সঠিকভাবে সুরক্ষা না নিলে স্কিন ড্যামেজ হওয়ার পাশাপাশি স্কিন ক্যানসারও হতে পারে। এই জন্য সান প্রটেক্টর ফ্যাক্টর থাকা সানস্ক্রিন অত্যন্ত জরুরী। ত্বকের বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলো দ্রুত আসা রোধ করার অন্যতম উপায় হচ্ছে সানস্ক্রিন ব্যবহার। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। প্রতিদিন সকালে শরীরের যেসব স্থানে সূর্যের আলো লাগে সেখানটাতে মাখতে হবে।
লিংক: 

📞 ত্বকের সমস্যার জন্য প্রোডাক্ট সাজেশন পেতে কল করুনঃ 01790 270066 অথবা ইনবক্স করুন। 
🌐 ১০০% অরিজিনাল কোরিয়ান প্রোডাক্টঃ https://chardike.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © chardike blog 2021
1 I like it
0 I don't like it

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.