শীতকাল মানেই ভরপুর ফ্যাশন। অধিকাংশ ফ্যাশন ডিজাইনার বা বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফ্যাশন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার আসল সময় হল শীতকাল। কারণ এইসময় বিভিন্ন ধরণের শীতের পোশাক মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে তৈরি করা যায় অসাধারণ কিছু স্টাইল স্টেটমেন্ট। আমরা যদি বাংলাদেশ এর পারস্পেক্টিভ থেকে চিন্তা করি তাহলে এখানের বেশির ভাগ মেয়ে সমাজের এবং পারিবারিক চাপে হয়ত ইচ্ছা থাকা সত্তেও প্যান্ট অথবা ট্রেন্ডি পোশাক পরতে পারে না কিন্তু শীতে এ ধরনের একটু ঝামেলা কম কারন যেমন পোশাকই হোক না কেন সমস্ত শরীর ঢাকা থাকে।তাই সবার মাথা ব্যাথাটাও একটু কম। আর যেহেতু ইদানিং ছেলেরা রেপ এর জন্য তাদের ভাল মানুষিকটাকে দায়ী না করে মেয়েদের পোশাককে দায়ী করে তাই আমাদের সমস্ত শরীর ঢেকে নিজেকে কিভাবে ট্রেন্ডি রাখা যায় আসুন জেনে নেওয়া যাক।
১. স্কার্ফ নেওয়ার স্টাইল
স্কার্ফ শীতকালের ফ্যাশনে খুবই ইন। শীতের জায়গায় বেড়াতে গেলে অবশ্যই সঙ্গে উলের স্কার্ফ রাখতে হবে। শার্ট বা পুলওভারের সঙ্গেও ক্যারি করতে পারেন স্কার্ফ। আর ফেব্রিক স্কার্ফ হলে তা মাথায় জড়িয়ে নিতে পারেন, এতে কানে ঠান্ডা লাগবে না। এছাড়া লেদারের জ্যাকেটের সঙ্গেও পেয়ার করতে পারেন ক্যাসুয়াল স্কার্ফ।
২. লং কোট ফ্যাশান
লং কোট পরার তো এটাই একমাত্র সময়। শীতকালে ওয়েস্টার্ন আউটফিটের সঙ্গে একরঙা লং কোটের জুরি মেলা ভার। তবে স্টাইল করে কিন্তু শর্ট স্কার্টের সঙ্গেও পরা যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত ঠান্ডায় না পরাই ভাল। এছাড়া স্মার্ট ক্যাসুয়াল লুক পেতে ফ্লোরাল লং কোটও পরতে পারেন।
৩. শাল নিন নতুন ভাবে
শাল শুনেই ভাবছেন তো সেই পুরনো আমলের ঠাকুমা-দিদিমার ব্যবহার করা শাল? আজকের দিনে ব্যপারটা কিন্তু আর সেরকম নয়। শালকেই এখন বিভিন্ন প্যাটার্নে এমনভাবে স্টিচ করা হচ্ছে যাতে করে সাবেক শালেই বদলে যেতে পারে ফ্যাশন ট্রেন্ড। এই যেমন ধরুন, একটা শালের দুধারে এমন পকেট বানিয়ে নিলেই তা দিতে পারে এক অন্যরকমের জ্যাকেট লুক। সেটাকে আবার গায়ের ওপর ফেলে দিলেই হয়ে যাবে শাল। এছাড়া শাল বা চাদরকে একটু অন্যরকমভাবে স্টাইলআপ করার জন্য সেটাকে বেল্ট দিয়ে পরা যেতে পারে। একটা পুলওভার বা ফুল শার্ট পরে নিয়ে তার ওপর থেকে গলার দু-পাশ থেকে শালটা নিয়ে কোমরে বেল্ট পরে নিতে পারেন। অথবা এখন বিভিন্ন রকম ভেলভেট শাল পাওয়া যায় যেটা অনেক ট্রেন্ডি এবং একটু ডার্ক কালার যা দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগে।অনেকেই কাস্মেরি শাল পছন্দ করেন এটাও বিভিন্ন পোশাকের সাথে বেশ মানিয়ে যায়।
৪. শ্রাগ দিয়ে সোয়েগ
অল্প শীতে শ্রাগ কিন্তু খুবই স্টাইলিশ । যেকোনও টপের ওপর কনট্রাস্ট কালারের শ্রাগ খুবই মানানসই। একেবারে অল্প শীতে স্টাইল করার জন্য এমন ক্রুশের কাজের শ্রাগ বেছে নিতে পারেন কারন এটা অনেক পাতলা হয়। অন্যদিকে জিন্স বা জেগিন্সের সঙ্গে ট্রাই করতে পারেন এমন কার্ডিগান লুকের লং শ্রাগ। এতে শরীর গরমও থাকবে আবার স্টাইলও হবে। শ্রাগে বোতাম না থাকার আপনারা স্টাইলিশ কিছু ব্রোচ ব্যবহার করতে পারেন যেন খালি না লাগে।
৫. উলের কুর্তির কামাল
সবার কাছেই ফ্যাশন মানে কিন্তু কমফর্ট। পোশাক যদি আরামদায়কই না হয়, তাহলে আর স্টাইল কীসে! আর তাই এমন মানুষের জন্য শীতের পোশাকে সেরা হল উলের কুর্তি। এখন বাজারে বিভিন্ন ডিজাইনে সুতোর কাজ করা উলের কুর্তি পাওয়া যায়। প্রচন্ড ঠান্ডায় মোটা উলের কুর্তি পরলে আরাম পাবেন সঙ্গে স্টাইলও হবে।
৬. পঞ্চুর স্টাইল
পঞ্চ বহুদিন থেকেই স্টাইলে ইন, যারা একটু ফাঙ্কি কিছু পছন্দ করেন, তাহলে বিভিন্ন ধরনের কাফতান স্টাইলের পঞ্চ পরে দেখতে পারেন।
৭. স্পোর্টস শু
শীতকাল মানেই পিকনিক, আউটিং আরও কত কি, তাই শীতের দিনে নর্মাল স্যান্ডেল পরার মতো ভুল করবেন না, তাহলে কিন্তু গোটা সাজটাই মাটি হয়ে যাবে। আর সেজন্যই ট্রাই করতে পারেন রঙবেরঙের স্পোর্টস শু । এতে আপনার স্টাইলও হল সেইসঙ্গে কমফোর্টও রইল।
৮. বুট দিয়ে স্টাইল
শীতের ফ্যাশন কিন্তু বুট পরার আসল সময়। ওয়েস্টার্ন আউটফিটের সঙ্গে বুটের যুগলবন্দি সবসময়েই সেরা। তাই এসময়ে ট্রাই করতে পারেন বিভিন্ন ধরণের বুট। প্লাটফর্ম হিলের সঙ্গে দড়ি বাঁধা বুট কিংবা বক্স হিল বুট পরে ফেলতে পারেন পছন্দসই পোশাকের সঙ্গে।
সর্বপরি শীতের ফ্যাশন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ঠান্ডা থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচানো যায়, সেই চেষ্টা করা। তাই ঠান্ডার হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে স্টাইল করুন, সুস্থ থাকুন।