স্কিনকেয়ারে সান্সক্রিনের গুরুত্ব

সান্সক্রিনের গুরুত্ব

আমাদের অনেক সময় প্রশ্ন থাকে যে ভালো ভালো ব্র্যান্ডের ব্রাইটেনিং প্রোডাক্ট ব্যবহারের পরও আমরা আশানুরুপ ফল কেনো পাচ্ছি না।আমাদের চেহারাতে সেই মলিন ও রোদে পোড়া ভাব যেনো থেকেই যাচ্ছে। প্রতিদিন দুইবেলা নিয়ম করে ক্লিঞ্জিং এর পরও কিছুটা যেন কমতি থেকেই গেল।ভাবছেন এত দামী প্রোডাক্ট ব্যবহারের পরও কমতিটা কোথায় করলাম? কমতিটা হয়তো একটা ভালো সান্সক্রিনের।
আমরা অনেকেই সান্সক্রিনকে খুব একটা গুরুত্ব দেই নাই। সান্সক্রিনের গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত। কিন্তু এই একটি জিনিসের পূর্ণ ব্যবহার আপনা্র ত্বকে এনে দিতে পারে একটি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। আজ তাহলে জেনে নেই সান্সক্রিন নিয়ে জানা অজানা কিছু তথ্য।

সান্সক্রিন কি?

আমাদের প্রত্যেকেই স্কিন নিয়ে সবথেকে বেশি যেই সমস্যার সম্মুখীন হই তা হচ্ছে সানবার্ন বা সানট্যান। সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি আমাদের ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। এই আলট্রাভায়োলেট রশ্মি বা সানবার্ন থেকে নিজের স্কিনকে সুরক্ষা দেয়াই মূলত সান্সক্রিনের গুরুত্ব ও কাজ। প্রতিটি সান্সক্রিনের প্যাকেটের উপর এসপিএফ কথাটি লেখা থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই এসপিএফ (SPF)কথাটি কেনো লেখা জানিনা। এসপিএফ এর ফুল ফর্ম হচ্ছে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর। নাম শুনেই বুঝা যাচ্ছে এর আসল কাজ হচ্ছে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে আমাদের ত্বককে সুরক্ষা দেয়া। এতে করে চেহারায় কালচে দাগ পড়ে যাওয়া বা সানবার্ন হওয়ার মত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় সহজেই।

সান্সক্রিন কেনো দরকার?

আমাদের অনেকেরই এমন ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে সানস্ক্রিন শুধু সানবার্ন থেকে বাঁচতেই আমরা ব্যবহার করি। সানস্ক্রিন শুধু সানবার্ন থেকে নয় বরং ত্বকের আরো অনেক ধরনের সমস্যা থেকে আমাদের সুরক্ষা দেয়। আমাদের অনেকেরই মেছতার সমস্যা রয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে মেছতার সমস্যা অনেক ক্ষেত্রে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির কারনে হয়ে থাকে।এছাড়াও ত্বকের এলার্জি বা বিভিন্ন চর্মরোগ থেকে প্রতিকার পেতে সান্সক্রিনের গুরুত্ব অনেক বেশি।

এসপিএফ (SPF) কীভাবে কাজ করে?

আগেই বলেছি, এসপিএফ (SPF) মানে হলো- সান প্রটেকশান ফ্যাক্টর (Sun Protection Factor)। এই এসপিএফ (SPF)এর উপরেই নির্ভর করে আপনার সানস্ক্রিন সান ড্যামেজ থেকে আপনার স্কিনকে কত সময়ের জন্যে সুরক্ষা দিতে পারবে। যখন কেউ এসপিএফ (SPF) ১৫ এর একটি সানস্ক্রিন ইউজ করে সেক্ষত্রে সে এসপিএফ (SPF) ১৫ কে ১০ দিয়ে গুণ করবে। গুণ করে যত মিনিট পাওয়া যাবে, সে ততো সময়ের জন্যে সূর্যরশ্মি থেকে প্রটেকটেড থাকবে। ফলাফল আসে ১৫০ মিনিট। অর্থাৎ ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের জন্যে আপনি নিশ্চিন্ত! ঠিক এভাবেই যে যেই এসপিএফ (SPF) ব্যবহার করছেন তাকে ১০ দিয়ে গুণ দিলেই পেয়ে যাবেন আপনি কতক্ষণ ইউভি বি সূর্যরশ্মি থেকে সুরক্ষিত আছেন। মূলত, এজন্যেই সানস্ক্রিন বাছাই করার সময় অনেকেই বেশি এসপিএফ (SPF) যুক্ত সানস্ক্রিন প্রেফার করে থাকে।

কত এসপিএফ যুক্ত সান্সক্রিন ব্যবহার করবো?

সাধারণত এসপিএফ ১৫ থেকে শুরু করে এসপিএফ ৫০ যুক্ত সান্সক্রিন বাজারে পাওয়া যায়। আপনার স্কিন টাইপ নরমাল হলে এমন সানস্ক্রিন বেছে নিন যেটি এসপিএফ ৩০ যুক্ত। যেহেতু এসপিএফ এর পরিমাণ অনুযায়ী তার কার্যকারিতার সময় নির্ভর করে তাই বেশি সময়ের জন্য রোদে বের হলে বা প্রখর রোদে বের হওয়ার জন্য এসপিএফ ৫০ যুক্ত সান্সক্রিন ব্যবহার করা বেশি উপযোগী।

স্কিন টাইপ অনুয়াযী সানস্ক্রিন সিলেক্ট

–অনেক সময় আমরা সান্সক্রিন ব্যবহারে অনীহা দেখাই কারণ কিছু কিছু সান্সক্রিন আমাদের স্কিনকে অনেক ওয়েলি করে দেয়।আসলে আমাদের প্রত্যেকের স্কিন টাইপ ভিন্ন। তাই একটি প্রোডাক্ট একজনকে স্যুট করলে সেটা আরেকজনকে তা নাও স্যুট করতে পারে। একই কারণে সানস্ক্রিন সিলেক্ট করার সময়ও স্কিনটাইপ বুঝে যেটি ভাল হবে সেটি কেনা উচিৎ। স্কিন টাইপ অয়েলি হলে জেল বা ওয়াটার বেইসড এসপিএফ ৫০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে স্কিনকে অতিরিক্ত অয়েলি করে তুলবে না। আর যদি ড্রাই স্কিন হয় তবে ক্রিম বেইসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন যাতে ময়েশ্চারাইজার রয়েছে।

কখন ব্যবহার করবো?

যখনই বাইরে যাবেন সে যত অল্প সময়ের জন্যই যান না কেন অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগিয়ে যাবেন। আমাদের অনেকের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে বৃষ্টি বা মেঘাচ্ছন্ন দিনে সান্সক্রিনের প্রয়োজন নেই। মেঘ বৃষ্টি যাই থাকুক না কেনো দিনের বেলা সান্সক্রিন ব্যবহার করা অত্যাবশ্যকীয়।এছাড়াও চুলার কাছে যাওয়ার আগে সান্সক্রিন ব্যবহার করা উচিৎ।

0 I like it
1 I don't like it

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.